সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের আগেই চালু হতে যাচ্ছে কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা সরাসরি বাস পরিষেবা।
সোমবার দুপুরে পেট্রাপোল বন্দরে ওই বাস পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে এক বৈঠকে যোগ দিয়ে ওই কথা জানিয়েছেন রাজ্য পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন ‘‘ভারত, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার ওই বাস পরিষেবা চালুর বিষয়টি নিয়ে শেষ মুহূর্তের (অ্যাডভান্স) আলোচনায় রয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর উপলক্ষে বাস চলাচলের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এটা প্রত্যাশিত, যে আগামী ৪ জুন বিকেল ৪টের সময়ে নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী ওই বাস পরিষেবার আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন।’’
পরিবহণ সচিব জানান, বাস পরিষেবার সূচনা হওয়ার পরে ওই দিন সন্ধ্যাতেই তিনি ও রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস-সহ উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দল পেট্রাপোল হয়ে ঢাকা যাবেন।
সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ ‘কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা’ পর্যন্ত যে বাসটি চলবে সেটিতে চড়ে পেট্রাপোল বন্দরে আসেন আলাপনবাবু। সঙ্গে ছিল এক প্রতিনিধি দল। বাসের সামনে লেখা ছিল, ‘‘ভারত-বাংলাদেশ সৌহার্দ্য যাত্রা’। বাসটির নাম ‘সৌহার্দ্য’। আলাপনবাবু এ দিন পেট্রাপোলে অভিবাসন দফতরে শুল্ক অভিবাসন, বিএসএফ ও জেলা পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে আধ ঘণ্টার বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে বাস চলাচল-সংক্রান্ত প্রক্রিয়াগত নানা বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। প্রায় পাঁচশো কিলোমিটার রুটের ওই বাস পরিষেবা চালু হলে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে ত্রিপুরার সরাসরি যোগাযোগ গড়ে উঠবে বলে জানান আলাপনবাবু। তিনি জানান, বাস মালিকেরাও ওই রুটে বাস চালাতে খুবই আগ্রহী। যাত্রীও পাওয়া যাবে।
তবে সপ্তাহে কত দিন বাস চলবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। রাজ্য সরকার সপ্তাহে তিন দিন বাস চালানোর প্রস্তাব দিয়েছে। ত্রিপুরা সরকার বাস চালাতে চায় কিনা, সেটাও আলোচনা সাপেক্ষ বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ দিন পেট্রাপোলে বৈঠক শেষে আলাপনবাবু প্রতিনিধি দল নিয়ে বেনাপোলে যান। নো-ম্যানস ল্যান্ডে তাঁকে স্বাগত জানান বাংলাদেশ পুলিশের কর্তারা। পরিবহণ সচিব বেনাপোলে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখান থেকে ঢাকা রওনা দেন সকলে।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, ঢাকাতেও আলাপনবাবু বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। মঙ্গলবার প্রতিনিধি দলটি আগরতলা পৌঁছবে। সেখানে ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা।
এত দিন ছিল কলকাতা-ঢাকা বাস পরিষেবা। এ বার কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা বাস পরিষেবা চালু হতে চলায় বাংলাদেশের মানুষ খুশি। এ দিন ও দেশ থেকে পেট্রাপোলে আসা মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বহু মানুষ বাংলাদেশের নানা প্রান্ত থেকে কলকাতায় চিকিৎসার প্রয়োজনে আসেন। তা ছাড়া অন্যান্য কাজেও তাঁরা ভারতে আসেন। ওই বাস পরিষেবা চালু হলে তাঁদের যাতায়াতের সুবিধা আরও বাড়বে এবং তাঁরা উপকৃত হবে বলে সকলে মনে করছেন।