বাংলাদেশ থেকে দেশে ফেরা ভারতীয় পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র
অশান্ত বাংলাদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ৭৭৮ জন ভারতীয় পড়ুয়া। শনিবার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে এই কথা জানানো হয়েছে। তবে মন্ত্রকের তরফে এ-ও জানানো হয়েছে যে, বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পাঠরত ৪,০০০-এর বেশি ভারতীয় পড়ুয়া এখনও সে দেশে রয়েছেন।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কিছু অভিবাসন কেন্দ্র (ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট) থেকে স্থলপথে দেশে ফেরানো হয়েছে কিছু পড়ুয়াকে। আর বাকিদের বিমানপথে উড়িয়ে আনা হয়েছে। পড়ুয়ারা যাতে নিরাপদে দেশে ফিরতে পারেন, সেই জন্য গোটা প্রক্রিয়াটি দেখভালের দায়িত্বে ছিল ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস। ভারতীয় দূতাবাসকে সাহায্যে এগিয়ে আসে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট এবং খুলনায় অবস্থিত ভারতীয় উপদূতাবাসগুলিও।
বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে উত্তপ্ত হওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে শনিবার পর্যন্ত দেশে ফেরানো হয়েছে মোট ৯৯৮ জন পড়ুয়াকে। এখনও সে দেশে রয়েছেন প্রায় চার হাজার ভারতীয় পড়ুয়া। সেই পড়ুয়াদের সঙ্গেও দূতাবাসের তরফে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। মন্ত্রকের বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, “বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত চার হাজারেরও বেশি পড়ুয়ার সঙ্গে ঢাকার দূতাবাস এবং উপদূতাবাসগুলি যোগাযোগ রাখছে এবং তাঁদের প্রয়োজনীয় সাহায্যও করা হচ্ছে।” শনিবারই বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে যে ভারতীয় পড়ুয়ারা আটকে পড়েছেন, তাঁদের ফেরানো হচ্ছে।’’
সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে বাংলাদেশে। আন্দোলনের পুরোভাগে রয়েছেন সে দেশের ছাত্রছাত্রীরাই। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়ে গত সোমবার থেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয় ছাত্রবিক্ষোভ। পুলিশের গুলিতে ছ’জন ছাত্রের মৃত্যুও হয়। এর পরেই বাংলাদেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভের আগুন। পথে নামেন অগুনতি মানুষ। চাকরি থেকে জনজাতিদের জন্য সংরক্ষণ বাদ দিয়ে বাকি সমস্ত কোটা তুলে দেওয়ার দাবি জোরালো হয়। এই আন্দোলনে প্রায় প্রতি দিনই পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ চলছে। সংবাদ সংস্থা এএফপি-র তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে অন্তত ১১৫। আর এক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা শতাধিক।