অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র ।
ছত্তীসগঢ়ের বস্তার ডিভিশনে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় আধাসেনার যৌথবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত মাওবাদীদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯। কাঁকের জেলা পুলিশের তরফে মঙ্গলবার রাতে এ কথা জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, মাওবাদীদের পুরোপুরি নির্মূল না করা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘নকশালেরাই উন্নয়ন এবং শান্তির পথে সবচেয়ে বড় শত্রু। তারা যুবকদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে তাঁদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে।’’
আগামী ২৬ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় ভোট হবে মাওবাদী উপদ্রুত কাঁকেরে। তার আগে কেন্দ্রীয় বাহিনী বিএসএফ এবং ছত্তীসগঢ় পুলিশের জেলা রিজার্ভ গার্ড (ডিআরজি)-এর যৌথ দল গত কয়েক দশকের মধ্যে মাওবাদী দমনে সব চেয়ে বড় সাফল্যের মুখ দেখল বলে সরকারের দাবি। মঙ্গলবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া গুলির লড়াইয়ে নিহতদের মধ্য রয়েছেন, নিষিদ্ধ সিপিআই (মাওবাদী) সংগঠনের প্রথম সারির নেতা শঙ্কর রাও। যাঁর মাথার দাম ছিল ২৫ লক্ষ টাকা। উদ্ধার হয়েছে সাতটি একে সিরিজ়ের স্বয়ংক্রিয় রাইফেল এবং তিনটি হালকা মেশিনগান (এলএমজি)। অন্য দিকে, সংঘর্ষে আহত হয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর তিন জন জওয়ান।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সফল অভিযানের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়ে এক্সে লিখেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী সরকারের আক্রমণাত্মক নীতি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর প্রচেষ্টার কারণে নকশালপন্থা এখন একটি ছোট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই ছত্তীসগঢ়-সহ গোটা দেশ সম্পূর্ণ নকশাল মুক্ত হবে। আজ, ছত্তীসগঢ়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে বিপুল সংখ্যক নকশাল নিহত হয়েছে। আমি সমস্ত নিরাপত্তাকর্মীকে অভিনন্দন জানাই, যাঁরা সাহসিকতার সঙ্গে এই অপারেশন সফল করেছেন। যাঁরা আহত হয়েছেন সেই সাহসী পুলিশকর্মীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’’
বিএসএফের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গোপন সূত্রে খবর এসেছিল কাঁকেরের জঙ্গলে প্রথম সারির মাওবাদী কমান্ডারেরা ঘাঁটি গেড়েছেন। সেই খবরের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনীর ১৮৫ জনের দল এলাকায় অভিযান শুরু করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ২০১০ সালে গোটা দেশের ৯৬টি জেলায় মাওবাদীদের উপদ্রব ছিল। কিন্তু এখন তা কমে এসে দাঁড়িয়েছে ৫০-এরও নীচে। এক দিকে নিয়মিত ভাবে অভিযান ও অন্য দিকে উন্নয়নের মাধ্যমে স্থানীয়দের সমাজের মূল স্রোতের সঙ্গে যুক্ত করার কৌশলেই যে সাফল্য মিলতে শুরু করেছে মঙ্গলবারের ঘটনা তার প্রমাণ।
ছত্তীসগঢ় সরকারের পরিসংখ্যান বলছে ২০২৩-এর ডিসেম্বর থেকে সে রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ৬৮ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন ৬ জন জওয়ান। অন্য দিকে, ১৭ জন গ্রামবাসীকে খুন করেছে মাওবাদী গেরিলা বাহিনী।