রুশদির বই বাতিল প্রসঙ্গে মুখ খুললেন নটবর সিংহ।
ভারতে ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ নিষিদ্ধ করা নিয়ে এ বার মুখ খুললেন প্রাক্তন কূটনীতিবিদ, রাজনীতিক নটবর সিংহ। ১৯৮৮ সালে বিশ্বজোড়া বিতর্কের মুখে তৎকালীন রাজীব গান্ধী সরকার দেশে এই বইটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। নিউ ইয়র্কে রুশদির ছুরিকাহত হওয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ১৯৮৮ সালের স্মৃতি রোমন্থন করলেন রাজীব মন্ত্রিসভার বিদেশ প্রতিমন্ত্রী নটবর। জানালেন, রুশদির বই নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তে কোনও অন্যায় ছিল না।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে নবতিপর রাজনীতিক জানিয়েছেন, তিনিও রুশদির বইকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের শরিক ছিলেন। তবে এই সিদ্ধান্তে কোনও অন্যায় ছিল না বলে দাবি করেছেন নটবর। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে নটবর জানান, ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ বাতিল করা হবে কি না, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী তাঁর পরামর্শ চেয়েছিলেন। তখন নটবর আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে বইটি বাতিল করার পরামর্শ দেন। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পিছনে যে অন্য কোনও কারণ ছিল না, তা-ও স্পষ্ট করেছেন তিনি। কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের মতো কেউ কেউ অবশ্য প্রকাশ্যেই এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। অবশ্য তাঁরা এ-ও জানিয়েছিলেন, এটা তাঁদের ব্যক্তিগত মতামত।
রুশদির উপর আক্রমণ নিয়েও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন নটবর। লেখকের উপর হামলার ঘটনাকে নিন্দা করে তিনি বলেন, “উনি কোনও দিন কারও ক্ষতি করেননি। সাহিত্যে বিপুল অবদান রেখেছেন উনি। ৭৫ বছরের ওই লেখকের উপর কিছু মানুষ বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছেন।”
আত্মপক্ষ সমর্থনের ভঙ্গিতে তিনি বলেন, “সারা জীবন আমি বই নিষিদ্ধ করার আগাগোড়া বিরোধিতা করে এসেছি। কিন্তু প্রশ্নটা যখন আইনশৃঙ্খলার হয়ে দাঁড়াল, তখন সলমন রুশদির মতো মহান লেখকের বইও নিষিদ্ধ করতে হয়েছে।” সেই সময়ের রাজনৈতিক সামাজিক পরিস্থিতির কথাও উঠে এসেছে নটবরের কথায়। নটবর জানান, সেই সময় দেশের নানা অঞ্চল থেকে উত্তেজনার খবর পাওয়া যাচ্ছিল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশও রুশদির এই বইটি নিয়ে সরব হয়েছিল। তাই ভারতের মতো দেশে এই বইটি নিষিদ্ধ করা ছাড়া অন্য কোনও উপায়ও ছিল না বলে দাবি করেছেন রাজীব মন্ত্রিসভার বিদেশ প্রতিমন্ত্রী।