সংসদে স্থলসীমান্ত বিলটি পাশ হওয়ার পরে আগামী মাসের ৬ তারিখে দু’দিনের বাংলাদেশ সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার সফরের এই দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে বিদেশ মন্ত্রক।
মন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ভারতের বিদেশনীতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে যে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়, মোদীর আসন্ন সফর তার প্রমাণ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে তিনিঢাকা যাচ্ছেন। এই সফরে দু’দেশের বন্ধুত্ব আরও মজবুত হবে বলেও বিদেশ মন্ত্রক আশা প্রকাশ করেছে। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সঙ্গেও সৌজন্য বৈঠক করবেন মোদী।তবে সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা মোদীর সফরসঙ্গী হচ্ছেন কিনা, সে বিষয়ে এ দিন কোনও ঘোষণা করা হয়নি।
বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্রের মতে, মোদীর এই সফরে দু’দেশের মধ্যে যোগায়োগ বাড়াতে যেমন বেশ কয়েকটি নতুন বাস ও ট্রেন পরিষেবার সূচনা করা হবে, তেমনই বাংলাদেশকে আরও বিদ্যুৎ দেওয়ার ঘোষণাও করা হবে। খুলনার কাছে দিল্লির প্রস্তাবিত একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের ক্ষতি করতে পারে— এই যুক্তি তুলে বাংলাদেশের একটি মহল ভারত-বিরোধিতার সুর চড়াচ্ছে। ভারতের পক্ষ থেকে বহু বারই বলা হয়েছে, এই আশঙ্কা অমূলক। কিন্তু তার পরেও অনাস্থার এই বাতাবরণ দূর করতে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে চায় দিল্লি। ঢাকার মাটিতে দাঁড়িয়ে তিস্তা চুক্তি নিয়েও কিছু আশারকথা শোনাতে পারেন মোদী।কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সোমবারই মন্তব্য করেছেন, সহমতের ভিত্তিতে তিস্তা চুক্তির জট অবিলম্বে কেটে যাবে বলে তিনি আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন।
এক কূটনীতিকের কথায়, ঢাকায় আগের সরকারের আমলে উত্তর-পূর্বের জঙ্গিরা বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়ে বিভিন্ন নাশকতামূলক কাজ করত। দিল্লি বার বার অভিযোগ করলেও তারা কানে তোলেনি। ভারতের গোয়েন্দা-তথ্যের ভিত্তিতে হাসিনা সরকার টানা অভিযান চালিয়ে তাদের বাংলাদেশ ছাড়া করেছে। এ জন্য বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মোদী। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দু’দেশের নিরাপত্তা বাহিনী বোঝাপড়া করে কাজ করে সাফল্য পেয়েছে। এই বোঝাপড়া জোরদার করতেও মোদীর ঢাকা সফরে কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ করা হচ্ছে। দু’দেশের জেলে বন্দি অপরাধীদের আদানপ্রদান নিয়েও কয়েকটি চুক্তি হতে পারে এই সফরে।