২০১৯-এর দৌড় শুরু করে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তাই এখন থেকেই চাপ বাড়ছে বিজেপির সাংসদ ও মন্ত্রীদের উপরে।
সাংসদেরা ‘নমো অ্যাপ’ ব্যবহার করছেন না বলে প্রধানমন্ত্রী সদ্য গত কালই বকুনি দিয়েছেন সাংসদদের। আর আজ তাঁদের নতুন বছরের কাজও সঁপে দিলেন তিনি। সে কাজ যে ভোটেরই প্রস্তুতি, সেটা বেশ স্পষ্ট। চাপটা শুধু প্রধানমন্ত্রীর নয়, সঙ্ঘেরও। সরকারের বিভিন্ন আর্থিক নীতি নিয়ে চাপ বাড়াতে এ দিন মোদী সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করে আরএসএসের বিভিন্ন সংগঠন।
প্রধানমন্ত্রী সাংসদদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে চান ‘নমো অ্যাপ’-এর মাধ্যমেই। মোদীর ধমক খাওয়ার পরেই অ্যাপটি ব্যবহার করা নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় বিজেপি সাংসদদের মধ্যে। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই এই অ্যাপের মাধ্যমেই কাজ সঁপে দিলেন মোদী। যার মূল লক্ষ্যই হল, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি কতটা সাড়া ফেলছে এবং সাংসদেরা কতটা সজাগ, তার খবর নেওয়া। গুজরাতে গ্রামে বিজেপির ধস নামার পর পরের লোকসভার দিকে তাকিয়ে এ বারে নতুন পন্থা নিলেন মোদী।
বিজেপি সূত্রের খবর, অ্যাপটির মাধ্যমে বিজেপি সাংসদদের নিয়ে একটি সমীক্ষা করছেন প্রধানমন্ত্রী। ১১ জানুয়ারির মধ্যে তার জবাব দিতে হবে সাংসদদের। তাঁদের প্রশ্ন করা হয়েছে, নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে কোন কেন্দ্রীয় প্রকল্প সব থেকে বেশি কার্যকর? চারটি সম্ভাব্য উত্তর বেছে নেওয়ার বিকল্পও দেওয়া হয়েছে। জনধন, উজ্জ্বলা, মুদ্রা ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা। যদিও সাংসদেরা চাইলে এর বাইরেও কোনও প্রকল্পের নাম বলতে পারেন। দ্বিতীয় প্রশ্ন, কী ভাবে এই প্রভাব মাপছেন সাংসদেরা? মানুষের সঙ্গে দেখা করে নাকি ইমেল-এসএমএসের মাধ্যমে? তৃতীয় প্রশ্ন, মানুষের রায় দলকে জানানোর কোনও পন্থা কি অবলম্বন করেন সাংসদেরা? চতুর্থ প্রশ্ন, মোদী-অ্যাপে কী গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়?
প্রধানমন্ত্রীর থেকে প্রশ্নপত্র পেয়েই সাংসদরা বুঝতে পারছেন, ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন মোদী। গুজরাত ভোটের ফল দেখার পর আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। সাংসদদের দৌড় করাবেন। জবাব মনের মতো না হলে, পরের বার আর প্রার্থীও করবেন না। গোটা রাশটিই এ বারে প্রধানমন্ত্রী নিজের হাতে তুলে নিলেন। নিজের রাজ্যে গ্রামে ধস নামার পরে এ বার গ্রামীণ এলাকাতেই সব থেকে বেশি জোর দিতে চাইছেন তিনি। আর সে কারণেই সামনের কর্নাটকে বিধানসভা ভোটের সময়েই প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য গ্রামীণ ও আধা-শহর এলাকা বেছে নেওয়ার তোড়জোর শুরু হয়েছে এখন থেকেই। খোদ অমিত শাহও বছরের শেষ দিনে বেঙ্গালুরুতে গিয়ে দলের সংগঠনের ফাঁকফোকরগুলি পূরণের চেষ্টা করবেন।
সমন্বয় বাড়ানো হবে বিজেপি ও সঙ্ঘের মধ্যেও। বিজেপি সূত্রের মতে, বৃন্দাবনে সঙ্ঘ-বিজেপির বৈঠকেই স্থির হয়েছিল আর্থিক বিষয় নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হবে উভয় পক্ষের মধ্যে। অমিত শাহের পরে
অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও আজ যান সঙ্ঘের সংগঠনের বৈঠকে। আরএসএসের পক্ষ থেকে ছিলেন কৃষ্ণগোপালও।