সন্ত্রাস মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার লক্ষ্যে জুলাই মাসে ইজরায়েল সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে কয়েক মাস ধরে ইজরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতার পরিকাঠামো চূড়ান্ত করা হবে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এখন ইজরায়েলে। এরপর বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর ও বিদেশ প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর গিয়ে চুক্তির খসড়া সম্পুর্ণ করবেন। ঠিক হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সফরে ভারতীয় সেনার জন্য মাঝারি নিশানার ক্ষেপণাস্ত্রের যৌথ উৎপাদনে আড়াইশো কোটি ডলারের চুক্তি সই হবে। ইজরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের সঙ্গে র-এর গোয়েন্দা তথ্য সমন্বয় ও প্রশিক্ষণের বিষয়টিও মোদীর সফরে সমান গুরুত্ব পাবে।
কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, চিন-পাকিস্তান-ইরান-এর যে অক্ষটি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে ভারতের মতো উদ্বিগ্ন ইজরায়েলও। এই অক্ষটি আফ-পাক অঞ্চলে তালিবানকে মদত দিচ্ছে। আইএস–এর বিশ্বজোড়া তাণ্ডব রুখতে এই অক্ষটি লস্কর ও তালিবানকে ব্যবহার করতে চায়। ডোভাল তাঁর সফরে সে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইউসুফ কোহেনের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, মোসাদ-এর শীর্ষ কর্তা এই কোহেনই। সূত্রের খবর, আলোচনা হয়েছে সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান নিয়েও।
প্রতিরক্ষা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত-ইজরায়েল দীর্ঘদিনের ‘বন্ধু’। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে সেই বন্ধুত্বকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছেন মোদী। সেই লক্ষ্যেই গত অক্টোবরে, প্রথম
কোনও ভারতীয় রাষ্ট্রনেতা হিসেবে ইজরায়েল যান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। বিদেশ মন্ত্রকের আশা, ডোভাল ও জয়শঙ্করের সফর সেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত আরও পোক্ত করবে। আর জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী গিয়ে সেই শক্ত ভিতের উপরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইমারত গড়তে পারবেন।
আরও পড়ুন: চান বিজয়নের মুন্ডু, প্রচারককে সরাল সঙ্ঘ
ইজরায়েলের সঙ্গে এই সখ্যের আড়ালে একটি কাঁটা অবশ্য ভারতীয় কূটনীতিকদের ভাবাচ্ছে। তা হলো, ভারত-জেরুজালেম সম্পর্ক। এত দিন, দু’পক্ষের সঙ্গেই ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে দিল্লি। কিন্তু মোদী ক্ষমতায় আসার পরে সেই ভারসাম্যে একটু হলেও বদল ঘটেছে বলে মত কূটনীতিকদের। প্রণববাবু যখন ইজরায়েল যান, তখন তাঁর সফরনামায় প্যালেস্তাইনও ছিল। প্রথম ভারতীয় রাষ্ট্রনেতা হিসেবে রামাল্লায় রাত কাটান তিনি। এ বার মোদী প্যালেস্তাইনে আদৌ যাবেন কি না, জানা যায়নি। তবে এ কথাও ঠিক যে, ইজরায়েলের সঙ্গে বেশি সখ্য দেখিয়ে পশ্চিম এশিয়ার অন্যান্য তেল সরবরাহকারী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে চায় না ভারত!