উপহার-ডালি নিয়ে কাঠমান্ডু যাচ্ছেন মোদী

সাউথ ব্লকের রক্তচাপ বাড়ার অন্যতম কারণ সম্প্রতি সে দেশের তিনটি কমিউনিস্ট দল (ইউএমএল, মাওবাদী, নয়াশক্তি) এই প্রথম একসঙ্গে জোট বেঁধে ভোটে নামছে। নভেম্বরে সে দেশে নির্বাচন।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৫২
Share:

নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত।

নির্বাচনের মুখে দাঁড়ানো নেপালে প্রবল ভাবে বাড়ছে চিনের আধিপত্য। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভারত-বিরোধী মনোভাবও। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর— এই পরিস্থিতিতে কাঠমান্ডুকে কী ভাবে কাছে টানা যায়, তার কৌশল রচনাই এখন অগ্রাধিকার পেতে চলেছে। আগামী মাসের গোড়ায় একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেপাল যাওয়ার কথা।
মোদীর সেই সফরকে রাজনৈতিক ভাবে সফল করে তুলতে কোমর বাঁধছে নয়াদিল্লি।

Advertisement

সাউথ ব্লকের রক্তচাপ বাড়ার অন্যতম কারণ সম্প্রতি সে দেশের তিনটি কমিউনিস্ট দল (ইউএমএল, মাওবাদী, নয়াশক্তি) এই প্রথম একসঙ্গে জোট বেঁধে ভোটে নামছে। নভেম্বরে সে দেশে নির্বাচন। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, কে পি ওলি, প্রচণ্ড এবং বাবুরাম ভট্টরাইয়ের নেতৃত্বাধীন এই তিনটি দলকে একসূত্রে গাঁথার কাজটি আসলে করছে বেজিং। ভারত-বন্ধু হিসেবে পরিচিত নেপালি কংগ্রেস এর ফলে নেপালে জমি হারাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:সঙ্ঘকে ঠেকাতে বিশেষ শিবিরে বিজয়ন-রেড্ডিরা

Advertisement

ইউএমএল নেতা কে পি ওলি নেপালের প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়েই নয়াদিল্লির সঙ্গে কাঠমান্ডুর সম্পর্ক সব চেয়ে খারাপ হয়েছে। নেপালের সংবিধান পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়নের পরই শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক এবং বিক্ষোভ। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মদেশীয় এবং তারু সম্প্রদায়ের বিক্ষোভের পিছনে নয়াদিল্লির হাত রয়েছে বলে প্রকাশ্যেই প্রচার করেছে ওলি সরকার। প্রচণ্ডের সঙ্গেও সাউথ ব্লকের সম্পর্কে তিক্ততা এসেছে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, প্রচণ্ড বরাবরই চিনের হাতে তামাক খেয়েছেন— এমন তথ্য ভারতের কাছে রয়েছে। প্রচণ্ডের সঙ্গে এই মুহূর্তে বেজিং-এর যোগাযোগ কতটা গভীর, সে দিকে গোপনে নজর রাখছে দিল্লি।

গত এক বছর ধরেই নেপালে চিনের প্রভাব-বৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা বেড়েছে সাউথ ব্লকের। দু’দেশের মধ্যে যৌথ সামরিক মহড়া, ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ প্রকল্পে চিন-নেপাল সহযোগিতা, দরপত্র না ডেকেই চিনা সংস্থাকে নেপালের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বরাত দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয় দিল্লি। ডোকলাম সংকটের সময় নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত চিনের অন্যতম শীর্ষ কূটনীতিক বৈঠক করেছিলেন নেপালি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে। কাঠমান্ডুকে চিন ক্রমাগত বুঝিয়ে চলেছে, অন্য দেশের সার্বভৌমত্বে নাক গলাচ্ছে ভারত।

পরিস্থিতি যাতে আরও বিগড়ে না যায় দিল্লি সে জন্য সর্বাত্মক ভাবে চেষ্টা অবশ্য চালু রয়েছে বেশ কিছু দিন ধরেই। ‘বিমস্টেক’ দেশগুলির বিদেশমন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দিতে কাঠমান্ডু গিয়ে নেপালকে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বড় রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে এসেছিলেন সুষমা স্বরাজ। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, পরিকাঠামো, এলপিজি সরবরাহ, জলবিদ্যুৎ, শিল্প এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো হবে। মেচি নদীর উপর সেতু তৈরির বিষয়ে মউ সই হবে। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন কাঠমান্ডু সফরেও নেপালের জন্য একগুচ্ছ উপহারের কথা ভাবছে নয়াদিল্লি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement