PM Narendra Modi

‘জয় বিজ্ঞান’ স্লোগান তুলে চাঁদের জমির নাম দিলেন ‘শিবশক্তি’! মোদীর চোখে আনন্দাশ্রু ইসরোর বক্তৃতায়

চন্দ্রযান-৩ যখন চাঁদের মাটিতে পা দেয়, তখন দেশে ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী। ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিলেন। শেষ লগ্নে ইসরোর সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৩ ০৭:৫৫
Share:

ইসরোতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত।

তৃতীয় চন্দ্রযানের অবতরণস্থলের নাম এখন থেকে ‘শিবশক্তি’। শনিবার সকালে গ্রিস থেকে ফিরেই ইসরোর দফতরে পৌঁছে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই এই ঘোষণা করন তিনি। পাশাপাশি, ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ চাঁদের যে জায়গায় ভেঙে পড়েছিল, সে জায়গারও নামকরণ তিনি করলেন। নাম দিলেন ‘তেরঙা’। তৃতীয় চন্দ্রযানের সাফল্যের জন্য ২৩ অগস্ট দিনটিকে ‘জাতীয় মহাকাশ দিবস’ হিসাবেও ঘোষণা করেছেন মোদী।

Advertisement

শনিবার বেঙ্গালুরু পৌঁছেই মোদীকে গাইতে শোনা গেল বিজ্ঞানের জয়গান। ইসরোর চন্দ্র অভিযান সফল হওয়ায় উচ্ছ্বসিত মোদী বিমানবন্দরে নেমেই বলেন, ‘‘জয় বিজ্ঞান জয় অনুসন্ধান’’। এর পর জনগণের উদ্দেশে স্বল্পসময় ভাষণ দেন মোদী। সেখানেও তাঁর মুখে বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানীদের স্তুতি শোনা গেল। এর পরই ইসরোর উদ্দেশে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

ইসরো পৌঁছে চন্দ্রযানের সাফল্যকাহিনি নিয়ে বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলার সময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন মোদী। চোখে জল চলে আসে তাঁর। এমনকি, কথা বলতে বলতে কয়েক বার কান্নায় গলা ভেঙে যায়। ইসরোর বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়ে মোদী বলেন, ‘‘ইসরোর বিজ্ঞানীদের ধৈর্য, পরিশ্রম দেশকে যে উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে, তা সাধারণ নয়। ভারতীয় বিজ্ঞানের অগ্রগতির শঙ্খনাদ শোনা যাচ্ছে।’’

Advertisement

চন্দ্রযানের সাফল্যে আবেগতাড়িত প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভারত চাঁদে পৌঁছে গিয়েছে। ইসরো আমাদের দেশকে গর্বিত করেছে। আমরা চাঁদের যে জায়গায় পৌঁছেছি, সেখানে আগে কেউ পৌঁছয়নি। সারা বিশ্ব ভারতীয় প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের প্রশংসা করছে। চন্দ্রযান-৩ ভারতের না, মানবতার সাফল্য। এই অভিযান দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন রাস্তা খুলে দেবে। পৃথিবীর সমস্যা সমাধানের কাজও করবে। আমি ইসরোর সব বিজ্ঞানী, কৌশলী এবং তৃতীয় চন্দ্রযানে সঙ্গে যুক্ত সকলকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’’

দু’দেশের সফর শেষে শনিবার দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ইসরোর বিজ্ঞানীদের সঙ্গে দেখা করবেন বলে গ্রিস থেকে সরাসরি বেঙ্গালুরু পৌঁছে যান তিনি। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরের বাইরে সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। এর পর তৃতীয় চন্দ্রযানের সাফল্যের নেপথ্যে থাকা ইসরো বিজ্ঞানীদের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে দেখা করবেন বলে ইসরোর কার্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হন।

বেঙ্গালুরুতে অবতরণের পরই সমাজমাধ্যম ‘এক্স’ (টুইটার)-এ পোস্ট করে প্রধানমন্ত্রী ইসরো বিজ্ঞানীদের সঙ্গে দেখা করার কথা জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, “বেঙ্গালুরুতে অবতরণ করেছি। আমি ইসরো সেই সব বিজ্ঞানীদের সঙ্গে দেখা করার জন্য মুখিয়ে রয়েছি যাঁরা চন্দ্রযান-৩ অভিযানকে সফল করে ভারতকে গর্বিত করেছেন।’’

চন্দ্রযান-৩ যখন চাঁদের মাটিতে পা দেয়, তখন দেশে ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী। ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিলেন। বুধবার ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা বেজে ৪ মিনিটে বিক্রম ল্যান্ডার অবতরণ করেছে চাঁদের মাটিতে। শেষ লগ্নে ইসরোর সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম দিকে বাকি ভারতবাসীর মতোই তাঁর মুখেও দেখা যাচ্ছিল উদ্বেগ। কিন্তু শেষ মুহূর্তে হাসি ফোটে। বিক্রম চাঁদের মাটি ছুঁতেই হাততালি দিয়ে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। তার পর তাঁকে দেখা যায় ভারতের পতাকা হাতে নিয়ে অভিনন্দন জানাতে। উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে ইসরো প্রধান এস সোমনাথকে ফোনও করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি ভারতের চাঁদে পৌঁছনোকে ‘একটি নতুন যুগের সূচনা’ বলেও তিনি মন্তব্য করেন। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মোদী উড়ে গিয়েছিলেন গ্রিসে। সেখান থেকে সোজা বেঙ্গালুরু পৌঁছলেন তিনি।

যদিও প্রধানমন্ত্রী মোদীকে স্বাগত জানানোর জন্য বিমানবন্দরে দেখা যায়নি কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এবং উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারকে। কংগ্রেসের অভিযোগ, তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে বিমানবন্দরের বাইরে বক্তৃতা করার প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “আমি নিজেই মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালকে বলেছিলাম যে, তাঁরা যেন না আসেন। কারণ, আমি বিজ্ঞানীদের সঙ্গে দেখা করার পরে চলে যাব।’’ এর পরই ইসরোর উদ্দেশে রওনা দেন মোদী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement