ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তৃতা নরেন্দ্র মোদীর।
সীমান্ত সঙ্ঘাত ঘিরে গলওয়ানে ভারতীয় এবং চিনা সেনার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সাক্ষী গোটা দুনিয়া। জুনের মাঝামাঝি ঘটে যাওয়া ওই ঘটনার প্রভাব এখনও তাজা রয়েছে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। সেই মোক্ষম সময়েই রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় ভারতকে নিরাপত্তা পরিষদে আরও গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করতে দেওয়ার পক্ষে সুর চড়ালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বস্তুত ভারতের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়ার দাবিটা আরও জোরালো ভাবে তুললেন প্রধানমন্ত্রী। ‘‘আর কত দিন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে? আর কত দিন রাষ্ট্রপুঞ্জের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ার বাইরে থাকবে ভারত?’’—এই প্রশ্নও তুললেন তিনি।
শনিবার ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। শুরু থেকেই তাঁর বক্তৃতার মেজাজ ছিল ধারালো। তিনি বলেন, ‘‘আমরা যখন দুর্বল ছিলাম, তখন গোটা বিশ্বের জন্য সমস্যা তৈরি করিনি। যখন শক্তিশালী হয়েছি, তখনও আমরা গোটা বিশ্বের কাছে বোঝা হয়ে উঠিনি। ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তি মিশনে সেনা পাঠিয়েছে এবং সবচেয়ে বেশি সেনা হারিয়েছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং ভারতের মূল আদর্শ এক সুরে বাঁধা। বসুধৈব কুটুম্বকম (গোটা বিশ্বই আত্মীয়) এই মন্ত্র রাষ্ট্রপুঞ্জের সভায় বার বার উচ্চারিত হয়েছে। ভারতও সর্বদা গোটা বিশ্বের কল্যাণের কথাই ভেবেছে।’’ এর পরেই তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, দেশের ১৩০ কোটি মানুষ এখনও এই আদর্শেই বিশ্বাস রাখে। এই ভিতের উপরে দাঁড়িয়েই এ দিন মোদী রাষ্ট্রপুঞ্জের সাংগঠনিক স্তরে সংস্কারের দাবি তোলেন। বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জে সংস্কার প্রয়োজন এবং ভারত সেই সংস্কারের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হলেন মুকুল রায়, পদ হারিয়ে ক্রুদ্ধ রাহুল
আরও পড়ুন: যৌথ উদ্যোগে অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র বানাবে ভারত ও ইজরায়েল
রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদই হল সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন। ওই পরিষদ কোনও দেশের উপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করার ক্ষমতা রাখে। বর্তমানে তার স্থায়ী সদস্য আমেরিকা, ব্রিটেন, রাশিয়া, ফ্রান্স এবং চিনের মতো ৫টি দেশ। এই দেশগুলির প্রত্যেকের ভোটে প্রয়োগ করার ক্ষমতাও রয়েছে। এর আগে ৭ বার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য ছিল ভারত। গত জুনে দ্বিতীয়বারের জন্য নির্বাচিত সদস্যের মর্যাদাও পেয়েছে ভারত। তার স্থায়িত্ব ২ বছর। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর পাখির চোখ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যের মর্যাদা ছিনিয়ে আনা। সেই লক্ষ্যেই এ দিন সুর চড়ান তিনি। কিন্তু ভারতের মুকুটে সেই পালক তুলে দেওয়ার পথে মূলত চিন কাঁটা ছড়িয়ে রেখেছে।