অমিত শাহ
উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনে সাফল্যের পর আক্রমণাত্মক বিজেপি এখন কার্যত ভারত দখলের কর্মযজ্ঞে নেমে পড়ল।
এই অঙ্ক অনুযায়ী বিজেপির প্রথম পরিকল্পনা হল বিরোধী ঐক্যকে ভাঙা। তা সে যত ছোট নির্বাচনই হোক না কেন। দিল্লির পুরনির্বাচনই হোক বা তামিলনাড়ু-কর্নাটকের উপনির্বাচন—সব ক্ষেত্রেই বিরোধী শিবিরের সমঝোতা ভেঙে ভোটে জিততে চাইছে বিজেপি। দ্বিতীয়ত, কংগ্রেসি নেতাদের বিজেপিতে এনে সাধারণ নেতা-কর্মীদের মনোবল ভেঙে দিতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। সেই কৌশলের অঙ্গ হিসেবে এন ডি তিওয়ারি, এস এম কৃষ্ণের পরে কংগ্রেসের আর এক প্রবীণ নেতা সি কে জাফর শরিফকে দলে আনার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে দলের অন্দরমহলে। তৃতীয়ত, যে সব রাজ্যে বিজেপির ক্ষমতা নেই সেখানে শক্তিশালী আঞ্চলিক দলকে দুর্বল করতে চাইছে তারা। যেমন ওড়িশা ও তামিলনাড়ুতে যথাক্রমে বিজেডি ও এডিএমকে-কে দুর্বল করতে জয় পণ্ডা এবং এম থাম্বিদুরাইয়ের মতো নেতাকে ব্যবহার করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি।
উত্তরপ্রদেশের পরে বিরোধী নেতারা বুঝতে পারছেন বিজেপিকে রুখতে গেলে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া উপায় নেই। সেই কারণে দিল্লি পুরসভার ক্ষেত্রে এক জোট হয়ে লড়ার পক্ষপাতী রাহুল গাঁধী। গত কাল যন্তরমন্তরে ধর্নার পরে রাহুল আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদকে বলেছেন, যাতে আরজেডি দিল্লিতে পৃথক প্রার্থী না দেয়। লালুপ্রসাদ জোটের পক্ষে হলেও, দিল্লি পুরসভা দখলের লড়াইতে নামা বিহারের আর এক প্রধান চরিত্র নীতীশ কুমার কিন্তু একক ভাবে লড়ার পক্ষপাতী। তাঁর দল জেডিইউ দিল্লি পুরভোটে কারও সঙ্গে জোট করার পক্ষপাতী নয়। বিরোধী নেতারা মনে করছেন, নীতীশের এই একলা চলোর পিছনে ইন্ধন রয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের। বিজেপির কারণেই লালুপ্রসাদ-রাহুলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শক্তিশালী একটি জোট গঠনে আগ্রহী নন নীতীশ।
আরও পড়ুন: নোট বদল নিয়ে ইডি-র অভিযান
বিজেপি জানে অরবিন্দ কেজরীবালের কাছে দিল্লি হারানোর পরে যদি পুরভোটে বিজেপি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে সে ক্ষেত্রে পুরনো ক্ষতে প্রলেপ পড়বে। গতকাল দিল্লির উপ-রাজ্যপাল অনিল বাইজল এক দিকে কেজরীবালের বিতর্কিত ফিডব্যাক ইউনিট বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্য দিকে তেমনি আজ সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করে কেজরীবাল সরকার বিজ্ঞাপন দেওয়ায় সেই টাকা আম আদমি পার্টিকে মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে দিল্লি পুরভোটের আগে কেজরীবাল ও তাঁর দলকে ঘিরে ধরতে তৎপর রয়েছে বিজেপি। অন্য দিকে কংগ্রেসকে চাপে রাখতে তারা হিমাচল প্রদেশেও সক্রিয় বলে ধারণা রাজনীতিকদের। তাঁদের মতে, ওই রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংহের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের চার্জশিট ফাইল করাই এই তৎপরতার প্রমাণ।