প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
জি২০-র পরে ভারতমণ্ডপম ‘সেলিব্রিটি’ হয়ে গিয়েছে তাঁর মতে। লোকে তার সঙ্গে নিজস্বী তুলে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করছে। রবিবার সকালে তাঁর রেডিয়ো অনুষ্ঠান 'মন কি বাত'-এ, এ কথা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
জি২০ এবং চন্দ্রযান অভিযানের সাফল্যকে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব যে আসন্ন রাজ্য নির্বাচনগুলিতেও হাতিয়ার করতে চলেছেন এবং তাঁদের তারকা প্রচারক হচ্ছেন মোদী— সেই ইঙ্গিত আজ খোদ মোদীই দিলেন দেশবাসীকে। ঘোষণা করলেন জি২০ নিয়ে পরবর্তী সময়ে (নভেম্বর পর্যন্ত ভারতের সভাপতিত্ব থাকছে) তাঁর জনসংযোগের কৌশল। দাবি করলেন, ইতিহাসে তাঁর সময়কাল অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল এই দুই ঘটনার হাত ধরে।
আজ মোদীর বক্তব্য, “কোটি কোটি ভারতবাসী বিভিন্ন মাধ্যমে চন্দ্রযান অভিযানের সাক্ষী থেকেছেন। চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের সময় ইসরোর ইউটিউব লাইভে ছিলেন ৮০ লাখ মানুষ। এটি একটি রেকর্ড। বোঝাই যাচ্ছে চন্দ্রযানের সঙ্গে ভারতবাসীর গভীর সংযোগ তৈরি হয়েছে।” চন্দ্রযান অভিযান নিয়ে ১৫ লাখ পোর্টালে মহাকুইজ় চলছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের আহ্বান জানিয়েছেন তাতে যোগ দিতে।
পাশাপাশি জি২০-তে গৃহীত ভারত-মধ্য এশিয়া-ইউরোপ করিডরের প্রস্তাব প্রসঙ্গে ভারতের অতীত ঐতিহ্যকে স্মরণ করে মোদী বলেছেন, “ভারত যখন বিপুল ভাবে সমৃদ্ধ ছিল, তখন রেশম পথ ছিল দেশের বাণিজ্যের এক প্রধান মাধ্যম। আজ যে আধুনিক করিডর গড়ার কথা হয়েছে, তা বিশ্ব বাণিজ্যের সব চেয়ে বড় আধার হয়ে উঠতে চলেছে। ইতিহাস মনে রাখবে ভারতের মাটিতে ভারতের সভাপতিত্বের সময় এই করিডর শুরু হয়েছিল।”
জি২০ উপলক্ষে ‘বিশ্ববিদ্যালয় সংযোগ মহা সম্মেলনের’ আয়োজনের কথা আজ ঘোষণা করেছেন মোদী তাঁর রেডিয়ো অনুষ্ঠানে। জানিয়েছেন দেশের সব বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এতে যোগ দেবে। ২৬ সেপ্টেম্বরের এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নিজেও যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
নিজের সরকারের কৃতিত্ব বর্ণনার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের সাফল্যের কথাও আজ তুলে ধরতে দেখা গিয়েছে মোদীকে। তার মধ্যেই তিনি উল্লেখ করেছেন জঙ্গলমহলের সাতনালা গ্রামের মহিলা শকুন্তলা সর্দারের কথা। তাঁকে দেশের মহিলাদের 'প্রেরণা' হিসাবে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “একটি সেলাই মেশিনের সাহায্যে শকুন্তলা সর্দার তাঁর নিজের, পরিবারের এবং আরও অনেকের জীবন বদলে দিয়েছেন। শালপাতার উপর বিভিন্ন নক্সা তৈরি করে বিক্রি করতে শুরু করেছিলেন তিনি। বিষয়টির চাহিদা ক্রমে বাড়তে থাকে। এখন তিনি মহিলাদের এই কাজের প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন। আগে তাঁর পরিবার শ্রমিকের কাজ করে পেট চালাত। এখন শকুন্তলা অন্যদেরও নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করছেন।”