প্রতীকী ছবি।
প্রশাসনকে ‘দুর্নীতিমুক্ত’ করতে ২২ জন কর-অফিসারকে অবসর নিতে বাধ্য করল মোদী সরকার। এই ২২ জন শুল্ক বা জিএসটি অফিসারের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। রাজস্ব দফতরের ২৭ জন উচ্চপদস্থ অফিসারকে দু’মাস আগেই অবসর নিতে বাধ্য করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ১২ জন প্রত্যক্ষ কর পর্ষদের অফিসার ছিলেন। তাঁদেরও প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই নানা রকম দুর্নীতি, ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ছিল। অধিকাংশ অফিসারের বিরুদ্ধেই সিবিআই বা ভিজিল্যান্স কমিশনের মামলা চলছিল।
কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক পর্ষদ সূত্রে আজ জানানো হয়, যে ২২ জনকে অবসর নিতে বাধ্য করা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অন্যান্য অভিযোগ ছিল। সিবিআই কয়েকজনকে হাতেনাতে ঘুষ নিতে গিয়ে ধরে। এঁদের মধ্যে কলকাতা জোনের সুপারিনটেন্ডেন্ট অচিন্ত্য কুমার প্রামাণিকও রয়েছেন। ২০১৫ সালে তিনি কোচবিহারের ঈগল খৈনি সংস্থার থেকে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ নিতে গিয়ে ধরা পড়েন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একাধিকবার দুর্নীতিমুক্ত কর প্রশাসনের কথা বলেছেন। লাল কেল্লা থেকে বক্তৃতায় বা সাক্ষাৎকারে তাঁর বক্তব্য ছিল, কর প্রশাসনে কিছু ‘ব্ল্যাক শিপ’ ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। সৎ করদাতাদের নিশানা করে হেনস্থা করেছে, সামান্য ত্রুটিতে কড়া শাস্তির নিদান দিয়েছে। এই ধরনের কাজকর্ম বরদাস্ত করা হবে না। কিন্তু কিছুদিন আগে কাফে কফি ডে-র কর্ণধারের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে আয়কর অফিসারদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। সরকারি সূত্রের খবর, ক্যাবিনেট সচিবালয় ও কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশন থেকে ভিজিল্যান্স কমিশনের আঞ্চলিক প্রধানদের মৌখিক ভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত দ্রুত শেষ করে, কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিস (পেনশন) বিধি মেনে কাদের নিয়ম মাফিক অবসর নিতে বাধ্য করা যাবে, তাদের চিহ্নিত করা হোক।
১৯৭২-এর কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিস (পেনশন) বিধি অনুযায়ী, জনস্বার্থে যে কোনও সরকারি অফিসারকে অবসর নিতে বাধ্য করা যায়। এতদিন এই নিয়ম থাকলেও তা বিশেষ কাজে লাগানো হয়নি। মোদী সরকার ২০১৪-য় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এ নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করেছে। সরকারি সূত্রের অবশ্য বক্তব্য, সরকারি নির্দেশের বিরুদ্ধে অফিসাররা ট্রাইবুনাল বা আদালতে গেলে, মামলার নিষ্পত্তি হতে হতে এমনিতেই অবসরের সময় এসে যাবে।