গ্রাফিক: সনৎ সিংহ
মোটর ভেহিকেলস বিভাগের ইন্সপেক্টর হতে গালে ঝকঝকে সাদা দাঁত থাকা চাই। নিয়মিত ভালভাবে ব্রাশ করা হতে হবে। পায়রার মতো বুক (pigeon chest) হলে চলবে না। সেই সঙ্গে ঠকঠকে হাঁটু (knock knees), চ্যাটালো পায়ের পাতা (flatfeet), হাতুড়ির মতো পায়ের আঙুল (hammer toes) থাকলে চাকরির আবেদন করা যাবে না। এমনটাই বলা ছিল অন্ধ্রপ্রদেশের ১৯১৪ সালের মোটর ভেহিকেলস আইনে। কিন্তু সেই আইন আর নেই। ছিল গত পাঁচ বছর আগেও। নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে যখন দেশের অনেক পুরনো আইনকে বাতিলের ঝুড়িতে পাঠায়, তখন এটিও সেই তালিকায় ছিল।
গত নভেম্বরেই তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করেছে মোদী সরকার। কিন্তু সে আইন ছিল মোদী সরকারের ঘোষিত। চাপে পড়ে যা ফিরিয়ে নিতে হয়। কিন্তু ক্ষমতায় আসার আগেই মোদী কথা দিয়েছিলেন, বিজেপি সরকার গড়লে দেশের এমন অনেক আইন রয়েছে যা সময়োপযোগী নয় বলে বাতিল করা দরকার। তেমন দেড় হাজারের বেশি আইন গত কয়েক বছরে দফায় দফায় বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এখনও হাজার খানেক অব্যবহৃত ব্রিটিশ জমানার আইন বাতিলের জন্য কেন্দ্র আলোচনা করছে বলেও জানা গিয়েছে।
এমনই একটি অধুনা বাতিল আইন ছিল গঙ্গা নদী পারাপারের। প্রাচীন আইনে বলা ছিল, গঙ্গা পার হওয়ার পারানি (কর) দু’আনার বেশি হতে পারবে না। দেশ ‘আনা থেকে পয়সা’য় চলে আসার পরেও থেকে গিয়েছিল সেই প্রাচীন আইন। তার জেরে নানা সমস্যাও তৈরি হয় বিভিন্ন সময়ে। এমন আরও একটি অবাক আইনের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। ১৯৩৪ সালের ইন্ডিয়ান এয়ারক্র্যাফ্ট আইন অনুযায়ী, ঘুড়ি ওড়াতে গেলে বিমান চালানোর সমান অনুমতি নিতে হত। একই ভাবে অনেক রাজ্যে এমন নিয়ম ছিল যে, আকাশ থেকে কোনও প্যামফ্লেট উড়ে পড়াটা বেআইনি। এই আইন সম্ভবত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তৈরি। আরও একটি প্রাচীন আইনে বলা ছিল ব্রিটিশ রাজ পরিবার ভারতের যে কোনও আদালতের রায় পর্যালোচনা করতে পারবে। রাস্তায় ১০ টাকার বেশি মূল্যের কিছু কুড়িয়ে পেয়ে প্রশাসনকে না জানালে জেল হওয়ার বিধান ছিল ১৮৭৮ সালের এক আইন অনুযায়ী।