কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাঁরা লোকসভা ভোটে জিতে ক্ষমতা এলে কৃষকদের কৃষি ঋণ মকুব করা হবে। সেই কৃষি ঋণ মকুবকে আজ ‘পাপ’ বলে মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে আজ ‘প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি’ প্রকল্পের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কৃষি ঋণ মকুবের মতো সহজ এবং সুবিধাজনক পথ আমাদের সামনেও ছিল। রাজনৈতিক সুবিধা এবং ভোটের জন্য খয়রাতি দিতে পারতাম। কিন্তু আমরা পাপ করতে চাইনি। ঋণ মকুবে মুষ্টিমেয় কিছু কৃষকেরই সুবিধা হয়।’’ ঘটনাচক্রে, যে রাজ্যে দাঁড়িয়ে মোদী কৃষি ঋণ মকুবের সমালোচনা করলেন, কিছু দিন আগে বিজেপি শাসিত সেই উত্তরপ্রদেশ সরকার কৃষিঋণ মকুব করেছে।
গত কয়েক বছর ধরে কখনও মহারাষ্ট্র, কখনও তামিলনাড়ু, কখনও রাজস্থানে কৃষি ঋণ মকুব-সহ একাধিক দাবি নিয়ে পথে মেনেছেন কৃষকেরা। দেশজুড়ে বাড়তে থাকা কৃষক অসন্তোষকে প্রশমিত করতে অন্তর্বর্তী বাজেটে ‘প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি’ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিল সরকার। ওই প্রকল্পে বরাদ্দ করা হয়েছে ৭৫,০০০ কোটি টাকা। যে কৃষকদের জমি ২ হেক্টরের কম, তাঁরা মাসে ৫০০ টাকা করে পাবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এক কোটির বেশি কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির দু’হাজার টাকা সরাসরি জমা পড়ছে...। যাঁরা এখনও পাননি, খুব তাড়াতাড়ি পেয়ে যাবেন।’’ মোদী আজও দাবি করেন, ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হবে। বিরোধীদের প্রশ্ন, তিন বছরে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তা হলে এই নগণ্য আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন কীসের! ইউপিএ সরকারের কৃষি ঋণ মকুবের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী আজ বলেন, ‘‘১০ বছরে ওরা ৫২ হাজার কোটি টাকা মকুব করেছিল। আমরা প্রতি বছর কৃষকদের ৭৫ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছি।’’
বিরোধীদের বিরুদ্ধে কৃষকদের নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ এনে মোদী বলেন, ‘‘কংগ্রেস, মহাভেজাল (সমাজবাদী পার্টি-বিএসপি জোট) সকলেই এক...। বিরোধীদল পরিচালিত রাজ্য সরকারগুলির প্রধানমন্ত্রী সম্মান নিধি প্রকল্পের জন্য কৃষকদের নামের তালিকা দিচ্ছে না। ওরা ভয় পাচ্ছে। আমরা ওদের মুখোশ খুলে দিয়েছি।’’
আজকের দিনকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে মোদীর টুইট, ‘‘এই প্রকল্প কৃষকদের সামনে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।’’ যদিও সমালোচনা করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের টুইট-কটাক্ষ, ‘‘আজ ভোটের জন্য নগদ দেওয়ার দিন (ক্যাশ ফর ভোট ডে)। সরকারি ভাবে কৃষক পরিবারগুলিকে দু’হাজার টাকা করে ঘুষ দিচ্ছে বিজেপি সরকার।’’ বিএসপি নেত্রী মায়াবতী বলেন, ‘‘এই সামান্য অর্থ সাহায্য আসলে বিজেপির নিষ্ঠুরতা এবং ঔদ্ধত্যের প্রকাশ।’’