ফাইল চিত্র।
প্রতিষেধককে কেন্দ্র করে গুজব ছড়ানোর জন্য পরোক্ষে বিরোধী নেতাদের দায়ী করে সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিষেধক নিয়ে ভ্রান্তি ও গুজব ছড়ানোর ঘটনা সরকারের চিন্তা বাড়িয়ে তুলেছে। কারণ এ জাতীয় গুজব ছড়িয়ে এক দিকে যেমন প্রতিষেধক উৎপাদনকারী সংস্থার মনোবল ভাঙার প্রচেষ্টা করা হয়েছিল, তেমনই আমজনতার মনে প্রতিষেধক নিয়ে ভয় ঢুকিয়ে টিকাকরণ অভিযানে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে।’’
১৬ জানুয়ারি থেকে দেশে শুরু হয়েছিল টিকাকরণ অভিযান। গোড়ায় প্রতিষেধক আদৌ কার্যকর হবে কি না, নিলেও তা কতটা নিরাপদ, দেশীয় প্রতিষেধক আদৌ বিশ্বাসযোগ্য কি না তা নিয়ে আমজনতার মধ্যে প্রবল সংশয় তৈরি হয়। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ওই ইন্ধনের পিছনে ছিল কিছু রাজ্য ও বিরোধীরা। এর ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রতিষেধক নেওয়া এড়িয়ে যান। ফলে দেশে গোড়ায় টিকাকরণের হার ছিল খুব কম। যা শুরুতে রীতিমতো উদ্বেগে রেখেছিল কেন্দ্রকে। পরে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি পাল্টায়। তবে গ্রামীণ ভারতের বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ এখনও প্রতিষেধক নেওয়ার প্রশ্নে ভীত, সংশয়াচ্ছন্ন। এই সংশয়ের জন্য পরোক্ষে বিরোধী নেতা ও রাজ্যগুলির একাংশকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভারতীয় প্রতিষেধকের গবেষণা শুরুর থেকেই আমজনতার মনে প্রতিষেধক প্রশ্নে আশঙ্কা জাগিয়ে তোলার একটি প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল। ভারতীয় টিকা উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির মনোবল দুর্বল করাও ছিল ওই প্রচারের আরে একটি লক্ষ্য। মানুষ যাতে টিকা না নেন সে জন্য প্রচার চালানো হয়।’’ বিজেপি শিবিরের অভিযোগ, প্রশ্ন ওঠে টিকাকরণ অভিযানের প্রথম ধাপে কেন চিকিৎসক ও ‘ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার’দের প্রতিষেধক দেওয়া হল? আমজনতার মধ্যে বয়স্ক ব্যক্তিরা কেন প্রাধান্য পাচ্ছেন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে বিভিন্ন শিবির। মোদীর দাবি, ‘‘প্রথমে চিকিৎসক ও ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদের টিকা দেওয়ায় করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় তাঁরা অনেকটা নিশ্চিন্ত হয়ে কাজ করতে পেরেছেন। ওই স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাই কর্মীদের টিকা না দেওয়া হলে কী হত এক বার ভেবে দেখুন।’’ বিজেপি শিবিরের মতে, যে সব বয়স্ক মানুষের বিপদ বেশি তাঁদের আগে টিকা দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। কেন্দ্রের যুক্তি, সেই কারণে বিশাল সংখ্যক বয়স্ক মানুষকে দ্বিতীয় ধাক্কার হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।
আজ মোদী কোনও বিরোধীর নাম না করেননি। কিন্তু বুঝিয়ে দিয়েছেন, টিকা বিশেষত দেশীয় টিকা নিয়ে বিরোধীরা অনাস্থা প্রকাশ করায় জনমানসে নেতিবাচক বার্তা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিষেধক বাজারে আসার আগে থেকেই নেতিবাচক প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছিল। এতে জনমানসে বিভ্রান্তি ছড়ায়। বিভিন্ন বাধার মুখে পড়তে হয় সরকারকে। এমনকি টিকা না নেওয়ার প্রচার হয়। যারা এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে তারা আসলে সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা করছে। দেশের মানুষ কিন্তু এদের নজরে রাখছেন।’’ আগামী দিনে দেশ জুড়ে টিকাকরণ অভিযানকে সফল করতে প্রবীণ-নবীন সকলকে এগিয়ে আসারই আবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী।