প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
‘অব কি বার, ৫০% পার’! আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী বিজেপির নেতাদের ৫০ শতাংশ ভোট টেনে আনার লক্ষ্য নিতে বললেন।
লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে শুক্র ও শনিবার বিজেপির জাতীয় পদাধিকারীদের বৈঠক বসেছিল। শুক্রবার বৈঠকে ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। শনিবার বৈঠকে যোগ দেন অমিত শাহ। বিজেপি সূত্রের খবর, এই বৈঠকের গোড়াতেই মোদী বিজেপি নেতাদের ৫০ শতাংশ ভোট ঝুলিতে টেনে আনার লক্ষ্য নিতে বলে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি এ বার লোকসভার অন্তত ৩৫০টি আসনে জেতার পরিকল্পনা করতে চাইছেন।
২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে ২৮২ আসনে জিতে নরেন্দ্র মোদী নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গড়লেও বিজেপি মাত্র ৩১ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। বিরোধীরা তাই বলতেন, দেশের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ বিজেপিকে ভোট দেয়নি। ২০১৯-এ বিজেপির আসন সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩০৩টি। ভোটের হার
৩৭.৩৬ শতাংশে পৌঁছে যায়। নরেন্দ্র মোদী এ বার সেই ভোটের হার ৫০ শতাংশে নিয়ে যেতে দলের নেতা-কর্মীদের ‘মিশন মোড’-এ কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সূত্রের খবর, দলের নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মোদী বলেছেন, বিরোধীদের নেতিবাচক প্রচারের জবাবে তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরে ইতিবাচক জবাব দিতে হবে। সামাজিক মাধ্যমে বা নেট দুনিয়ায় নিজেদের বক্তব্য আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে তুলে ধরতে হবে। মোদী সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কোথায়, কত সুবিধা পৌঁছেছে, তা তুলে ধরতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্য কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারতের মতো প্রকল্প রূপায়ণ করেনি বলে প্রায়ই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা সরব হন। সূত্রের খবর, মোদী বিজেপি নেতাদের বলেছেন, এ বিষয়ে আক্রমণাত্মক প্রচারে গিয়ে বিরোধী শাসিত রাজ্যে কোথায়, কোন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা থেকে মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন, তা তুলে ধরতে হবে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা একশো শতাংশ যোগ্য নাগরিকের কাছে পৌঁছে দিতে ও মোদী সরকারের প্রকল্প, মোদীর গ্যারান্টির প্রচারে ‘বিকশিত ভারত সঙ্কল্প যাত্রা’ অভিযান শুরু হয়েছে। দলের নেতাদেরও মোদী সরকারের কাজ নিয়ে প্রচারে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিন হিন্দি বলয়ের রাজ্যে জয়ের পরে মোদী দলের কর্মীদের বলেছিলেন, বিজেপির জয়ের হ্যাটট্রিক লোকসভা নির্বাচনে জয়ের হ্যাটট্রিকেও নিশ্চিত করে দিয়েছে। বিরোধীদের জাতগণনার দাবির জবাবে মোদী বলেছিলেন, তাঁর কাছে চারটি জাত — মহিলা, গরিব, তরুণ ও কৃষক। বিজেপির বৈঠকেও মোদী এই চারটি ভোটব্যাঙ্কে নজর দেওয়ার কথা বলেছেন।
বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, অন্তত ১৬০টি লোকসভা কেন্দ্রে দলের কাজকর্মে খামতি রয়েছে। যে সব কেন্দ্রে বিজেপি খুবই কম ব্যবধানে জিতেছিল এবং কখনও জেতেনি, সেখানে দলের প্রবীণ নেতা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের আগেই নজর দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই সব আসনে আগেভাগেই প্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছে বিজেপি।