ফকিরের ঝোলা ছেড়ে নরেন্দ্র মোদীর হাতে ফের চায়ের কেটলি!
ভোট আসছে!
এর আগে লোপ্পা বল ছুড়েছিলেন কংগ্রেস নেতা শশী তারুর। একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে গিয়ে বলেছেন, নেহরুর অবদানের জন্যই একজন চা-ওয়ালাও প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। আজ ভোটমুখী মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তীসগঢ়ে প্রচারে গিয়ে সেই বল লুফে নিলেন মোদী। কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে সরব হন। নেহরু-গাঁধী পরিবারকে সরাসরি আক্রমণ করে বারবার তুললেন চা-ওয়ালার গৌরব-গাথা!
আর তুললেন নোটবাতিলের প্রসঙ্গ। এবং সেটা করতে গিয়ে নিজেই বিতর্কে জড়ালেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ-সহ দুনিয়ার সিংহ ভাগ অর্থনীতিবিদ যে ভাবে নোটবাতিলের বিরুদ্ধে বলেছেন, তাতে মোদী নিজে তো বটেই, বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরাও ইদানিং বিষয়টি নিয়ে বিশেষ মুখ খোলেন না। কিন্তু এ দিন মোদী বললেন। এবং তখনই বললেন, ‘‘এক জন বৃদ্ধ পর্যন্ত তাঁর পুত্রশোক এক বছরের মধ্যে সামলে উঠতে পারেন। তা হলে ভেবে দেখুন, কংগ্রেসের কতটা ক্ষতি হয়েছে যে, নোটবাতিলের দু’বছর পরেও তারা শোক ভুলতে পারছে না! নোটবাতিল নিয়ে গোড়ার দিকে মানুষের যে অসুবিধা হয়েছিল, তার জন্য আমি প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছি।’’ বৃদ্ধের সন্তান হারানোর উপমা টেনে মোদীর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর থেকে এ রকম মন্তব্য নতুন কিছু নয়। একমাত্র তিনিই পারেন যাবতীয় বাক্সৌজন্য ভেঙে দিতে।’’
ছত্তীসগঢ়ের অম্বিকাপুরে মোদী বলেন, ‘‘প্রায় সাড়ে চার বছর হতে চলল। কিন্তু এরা এখনও মেনে নিতে পারল না যে, আমি প্রধানমন্ত্রী। এখনও তারা কাঁদছে এই ভেবে যে, একজন চা-ওয়ালা কী ভাবে প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন?” নেহরু তথা গাঁধী পরিবারকে বারবার ‘রাজপরিবার’ হিসেবে উল্লেখ করে মোদী বলেন, ‘‘আমি চ্যালেঞ্জ করছি, গাঁধী পরিবারের বাইরের কাউকে অন্তত পাঁচ বছরের জন্য সভাপতি করে দেখাক কংগ্রেস। তার পর বলব, নেহরুজি প্রকৃতপক্ষে দেশে গণতান্ত্রিক কাঠামো চালু করেছিলেন।’’
নেহরু এবং চা-ওয়ালা নিয়ে মোদীর এমন মন্তব্যের পরেই এল অস্বস্তি। দলের স্থানীয় বিধায়ক প্রমীলা সিংহ এ বার টিকিট পাননি। এ দিন মোদীর সভার পরেই তিনি সদলবল কংগ্রেসে যোগ দিলেন। অস্বস্তি বাড়িয়েছেন দলের উত্তরপ্রদেশের সাংসদ শ্যামাচরণ গুপ্তও। তারুরের মত সমর্থন করে তিনিও বলেন, নেহরুর নীতির জন্যই চা-ওয়ালা প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।
পবন খেরা এ দিন বলেন, ‘‘মোদী চা-ওয়ালা কথাটি শুনে এত রেগে যান কেন? তাঁর কি নিজেকে অপমানিত মনে হয়?’’ তাঁর তির্যক মন্তব্য, ‘‘আমরা মোদীকে কংগ্রেসের ইতিহাস সংক্রান্ত বই পাঠাচ্ছি। উনি দিনে ১ ঘণ্টা করে পড়ুন। তা হলে বাকি তিন মাসে দেশের জন্য কিছু করতে পারবেন!’’ রাহুল গাঁধী এ দিন মধ্যপ্রদেশে বলেন, ‘‘কংগ্রেস যা যা প্রকল্প করেছে, তা আমজনতার জন্য। মোদী সেই টাকা চুরি করেছেন।’’