ইনফোসিসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণমূর্তি।- ফাইল চিত্র।
চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার বিশাল সিক্কার ইস্তফার পর বোর্ডকর্তাদের ঝাঁঝালো সমালোচনার মুখে ইনফোসিসের প্রাণপুরুষ নারায়ণমূর্তি বললেন, তাঁর যন্ত্রণা হচ্ছে। তিনি অত্যন্ত মর্মাহত। টাকার জন্য নয়। পদের মোহে নয়। ছেলেমেয়েদের প্রতিষ্ঠা, সমৃদ্ধির জন্য নয়। ইনফোসিসের কর্পোরেট গভর্ন্যান্সের মান দ্রুত নেমে যাওয়াটা তিনি মেনে নিতে পারেননি। পারছেন না।
চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) সিক্কার ইস্তফার পর ইনফোসিসের বোর্ড অফ ডিরেক্টর্সের বেশির ভাগ সদস্যই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণমূর্তির দিকে। বোর্ডের সরকারি বিবৃতিতে তা লেখাও হয়েছে।
সংস্থার বোর্ড অফ ডিরেক্টর্সের সেই বিবৃতির জবাবে নারায়ণমূর্তি লিখেছেন, ‘‘আমি বিবৃতিটি পড়েছি। যে ভাষায়, যে সুরে আমার বিরুদ্ধে নানা রকমের অভিযোগ ওই বিব়ৃতিতে করা হয়েছে, তাতে আমি অত্যন্ত মর্মাহত। আমি স্বেচ্ছায় বোর্ড ছেড়ে দিয়েছিলাম ২০১৪ সালে। আমি ছেলেমেয়েদের জন্য টাকা চাইছি না, পদ চাইছি না। ক্ষমতা চাইছি না। সংস্থার কর্পোরেট গভর্ন্যান্সের মান পড়ে যাচ্ছে, এটাই আমার উদ্বেগের সবচেয়ে বড় কারণ ছিল। আমি যা বহু বার ইনফোসিসের বোর্ডের নজরে এনেছিলাম।’’
আরও পড়ুন- প্রতিষ্ঠাতাদের উগ্র‘মূর্তি’ই ইস্তফার কারণ, চিঠি বিশালের
আরও পড়ুন- রাজ্যে আলুচাষে বিপর্যয় আসছে, রিপোর্ট কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের
তিন বছর আগে ইনফোসিসের সিইও হয়েছিলেন বিশাল সিক্কা। সেই প্রথম কেউ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা না হয়েও সিইও হয়েছিলেন ইনফোসিসের। খবর, তাঁর নিজের বেতন ও অন্য এক্সিকিউটিভদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা নিয়ে সিক্কার তুমুল বাদানুবাদ হয় নারায়ণমূর্তির সঙ্গে। তারই জেরে তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দেন সিক্কা। বোর্ড তাঁকে ভাইস চেয়ারম্যানের পদে নিযুক্ত করে। আর ইনফোসিসের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) ইউ বি প্রবীণ রাওকে অস্থায়ী ভাবে সিইও করা হয়। তার পর ইনফোসিসের বোর্ডের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘‘বোর্ডের সার্বিক সমর্থন সত্ত্বেও নারায়ণমূর্তির লাগাতার উগ্র মূর্তির জন্যই সিক্কা ইস্তফা দিয়েছেন।’’
তারই জবাবে নারায়ণমূর্তি লিখেছেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যে ভিত্তিহীন অভিযোগগুলি করা হয়েছে, তার জবাব দিতে আমার রুচিতে বাধছে। সংস্থার বেশ কয়েক জন শেয়ারহোল্ডার আমাকে বলেছেন, বোর্ডের সেই বিবৃতি তাঁরা পড়েছেন। তাঁদের ওই অভিযোগগুলি বিশ্বাস করা কঠিন হয়েছে। তাঁদেরও মনে হয়েছে, যাঁরা দোষী, তাঁরাই টাকাপয়সা দিয়ে আইনজীবীদের দিয়ে ওই বিবৃতি লিখিয়েছে। যেখানে দোষীদের রেহাই দেওয়া হয়েছে।’’
যথা সময়ে, যথাস্থানে সেই সব অভিযোগের যথাযথ জবাব দেবেন বলেও জানিয়েছেন নারায়ণমূর্তি।