দেহ আসার বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে, আজ ভোররাতে, প্রেম সাগর ও পরমজিৎ সিংহের শেষকৃত্য সম্পন্ন হলো। রবিবার গভীর রাতে জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলায় নিয়ন্ত্রণরেখার যোগাযোগ স্থাপনকারী লাইন সারাতে গিয়ে পাক সেনার হানাদারবাহিনীর কবলে পড়েছিলেন সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর ২০০তম ব্যাটেলিয়নের হেড কনস্টেবল প্রেম সিংহ এবং ২২ নম্বর শিখ রেজিমেন্টের নায়েব সুবেদার পরমজিৎ সিংহ। সোমবার ভোরে তাঁদের মুণ্ডহীন, বিকৃত দেহ উদ্ধার হয়।
পঞ্জাবের তরন তারনের বাসিন্দা পরমজিতের দেহ পৌঁছনোর পর থেকেই রাগে ফুঁসছে গ্রাম। জাতীয় পতাকায় ঢাকা পরমজিতের কফিন দেখিয়ে তাঁর পরিবার প্রশ্ন তোলে, ‘‘কেন আমাদের দেহ দেখানো হচ্ছে না? ওটি কার দেহ? ওই বাক্সে কী রয়েছে, আমরা তো তা জানি না।’’ একই উষ্মা উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়া গ্রামে। গত কাল সেখানে শহিদ প্রেম সিংহের কফিনবন্দি দেহ এসে পৌঁছেছিল। কিন্তু দেহটি তাঁদের না দেখালে কিছুতেই দাহ করাতে রাজি হচ্ছিলেন না প্রেমের নিকটাত্মীয়েরা। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গেও কথা বলার দাবি তোলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে কথা আজ থেকে
অবশেষে কাল মাঝরাতে ফোন করেন আদিত্যনাথ। মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সাগরের বড় ছেলেকে আশ্বাস দেন, শ্রাদ্ধের আগে, আগামী ১৩ দিনের মধ্যে অবশ্যই তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন। তা ছাড়া, নিহত কনস্টেবলের স্মৃতিতে তিনি একটি স্কুল ও স্মৃতিসৌধ গড়ে দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে নিহতের দেহ দাহ করার সিদ্ধান্ত নেয় তাঁর পরিবার।
শহিদ পরমজিৎ সিংহের স্ত্রী পরমজিৎ কৌর বারবার অনুরোধ করছিলেন, স্বামীকে শেষ বারের জন্য দেখতে দেওয়া হোক। কিন্তু কফিনের ঢাকা খোলার পরে হতবাক হয়ে যান পরমজিৎ। তাঁদের ১২ বছরের মেয়ে চিৎকার করে ওঠে— ‘‘এ কী! আমার বাবার মাথা কোথায় গেল?’’
কিশোরীর হাহাকারের উত্তর কেউ দিতে পারেননি।