শেষ পর্যন্ত মতে অনড় থাকলে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ত্যাগ করে অন্ধ্রপ্রদেশে একা লড়তে পারেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। রাজ্যের প্রতি উপেক্ষা ও সাম্প্রদায়িকতার বিপদ, এই দু’টি বিষয়ে সরব হয়ে তেলুগু দেশম এনডিএ ত্যাগ করতে পারে বলে দলীয় সূত্রে খবর। দলীয় সূত্রে খবর, গোপনে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন তিনি। তবে আগামিকাল অমরাবতীতে দেশমের সংসদীয় দলের বৈঠকে এনডিএ ছাড়া নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না-ও হতে পারে। দলের জাতীয় সভাপতি চন্দ্রবাবু নায়ডু এই বিষয়ে ধাপে ধাপে এগোনোর সময়সূচি তৈরি করে ফেলেছেন।
প্রথমে প্রকাশ্য সমালোচনা শুরু করেছেন চন্দ্রবাবু। নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় তাঁর দলের দুই সদস্য রয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও সরকারের নীতি এবং বিজেপির রাজনীতির কড়া সমালোচনা শুরু করেছেন তিনি। বিজেপিকে চাপে ফেলতে শিবসেনা, অকালি দলের মতো এন়ডিএ-র শরিক দলগুলিকে নিয়ে আলাদা বৈঠকও করার চেষ্টা করছেন। দ্বিতীয় ধাপে দুই মন্ত্রী প্রতিবাদ জানিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন। দলীয় সূত্রে অবশ্য খবর, দুই মন্ত্রী বেশ উদ্বেগে আছেন। কারণ, ‘বাবু’ চাইলে আগামিকালই ইস্তফা দিতে হবে তাঁদের। তবে সম্প্রতি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রবাবুর সঙ্গে দেখা করেছেন। মাঝেমধ্যেই ফোনে যোগাযোগও রাখছেন। এমনকী তেলুগু দেশমের দুই মন্ত্রীর সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে বিজেপি। চন্দ্রবাবু যাতে দ্রুত কোনও সিদ্ধান্ত না নেন সে জন্যই এই চেষ্টা।
কিন্তু হঠাৎ কেন এ পথে হাঁটছেন চন্দ্রবাবু? রাজনীতিকদের মতে, বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, চন্দ্রবাবু বুঝতে পেরেছেন রাজনৈতিক উল্টোরথ শুরু হয়েছে। মোদীর জনপ্রিয়তা কমছে। অতীতেও যুক্তফ্রন্ট ও এনডিএ আমলে ডিএমকে বা তৃণমূলের মতো অন্য আঞ্চলিক দলের মতোই পক্ষ বদল করেছেন চন্দ্রবাবু। এ বারও সেই পথে হাঁটতে চাইছেন তিনি। দ্বিতীয়ত, এখন রাজ্যে চন্দ্রবাবুর প্রধান প্রতিপক্ষ জগন্মোহন রেড্ডি। রাজনীতিকদের মতে, জগনের সঙ্গে তলে তলে যোগাযোগ রাখছে বিজেপি। মামলা থেকে বাঁচতে ও সম্পত্তি রক্ষা করতে জগন এনডিএ-র নয়া শরিক হতে তৈরি। ফলে চন্দ্রবাবুও রাহুল গাঁধীর কংগ্রেসের সঙ্গে গোপনে আলোচনা শুরু করেছেন।
যুক্তফ্রন্টের সরকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন চন্দ্রবাবু। সেই সরকারকে সমর্থন করেছিল কংগ্রেস। ফলে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করে চলার অভিজ্ঞতা ‘বাবু’র আছে। দলীয় সূত্রে খবর, তেলঙ্গানা তৈরির সময়ে চন্দ্রশেখর রাওয়ের দলের দুই বিধান পরিষদ সদস্যকে বেআইনি ভাবে দলে টানার চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে চন্দ্রবাবুর বিরুদ্ধে। সিবিআই সেই অভিযোগের তদন্ত করছে। সেই মামলাকে সামনে রেখে ‘বাবু’র সঙ্গে রাজনৈতিক দর কষাকষিও করছে বিজেপি। ফলে চন্দ্রবাবুও বিজেপিকে পাল্টা চাপ দিচ্ছেন।