দিল্লি পুলিশের কম্যান্ডো ড্রিল রাজধানীর খান মার্কেট এলাকায়। প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে এ ভাবেই নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করার ব্যবস্থা দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
প্রজাতন্ত্র দিবসের মাত্র কয়েক দিন আগে দু’টি নিখোঁজ গাড়ি ঘিরে তোলপাড় দিল্লি। একটি গাড়ির যোগ পঠানকোটের সঙ্গে। অন্য গাড়িটি নয়ডা থেকে চুরি গেলেও, পঠানকোটে হামলার ছকের সঙ্গে মিল রয়েছে এই চুরির ঘটনাটির। এমনিতেই প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে দেশ জুড়ে চূড়ান্ত সতর্কতা রয়েছে। জঙ্গি যোগ থাকার সন্দেহে চলছে প্রচুর ধরপাকড়। কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, উত্তরাখণ্ড সহ নানা জায়গা থেকে এনআইএ এবং পুলিশ বহু জনকে আটক করেছে। কিন্তু এত তত্পরতার মধ্যেও গাড়ি রহস্যের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত উদ্বেগ যাচ্ছে না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের।
দিল্লি পুলিশ টুইটারে বিজ্ঞপ্তি জারি করে মিডিয়ারও সাহায্য চেয়েছে। টুইট বিজ্ঞপ্তিতে যে গাড়িটির নম্বর প্রকাশ করা হয়েছে, সেটি এটি সাদা রঙের অল্টো। ট্যাক্সি হিসেবে ব্যবহৃত হত। জানুয়ারির গোড়ার দিকে পঠানকোট থেকে তিন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ওই ট্যাক্সিটি ভাড়া নেয়। গাড়িটির চালক বিজয় কুমারের মৃতদেহ দু’দিন আগে উদ্ধার হয়েছে হিমাচল প্রদেশের কাংড়া জেলা থেকে। গাড়িটির খোঁজ নেই। খোঁজ নেই তিন অজ্ঞাতপরিচয় আরোহীরও। এই ঘটনা রক্তচাপ বাড়িয়ে দিয়েছে দিল্লি পুলিশের।
বিড়ম্বনা আরও বেড়েছে নয়ডা থেকে একটি সাদা রঙের এসইউভি চুরি যাওয়ার খবর সামনে আসায়। ইন্দো টিবেটান বর্ডার পুলিশ-এর আইজি পদমর্যাদার এক অফিসারের গাড়ি সেটি। তাঁর বাড়ির গ্যারাজ থেকেই গাড়িটি উধাও হয়েছে।
পঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার সময়ও পদস্থ পুলিশ কর্তার গাড়ি চুরি করে হানা দেওয়ার পথই বেছে নিয়েছিল জঙ্গিরা। পঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার এসপি সলবিন্দর সিংহের নীল বাতি লাগানো গাড়ি ছিনতাই করে জঙ্গিরা হানা দেওয়ায় কোনও চেক পোস্টে তাদের তল্লাশির মুখে পড়তে হয়নি। ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশের আইজি-র গাড়িও কি সে রকম কোনও উদ্দেশ্যে চুরি করা হল? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ঘুম ছুটেছে পুলিশের। গাড়ি দু’টির খোঁজ পেতে দেশের বিভিন্ন অংশে মরিয়া তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনী।
২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁ। আইএসআইএস-এর নাম করে ওলাঁর এই ভারত সফরে নাশকতা ঘটানোর হুমকি চিঠি পৌঁছেছে বেঙ্গালুরুর ফরাসি দূতাবাসে। তার পরই কর্নাটকের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে আইএস যোগসূত্রের অভিযোগে ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ। একই রকম অভিযোগে হায়দরাবাদ থেকেও ৪ সন্দেহভানকে এনাইএ গ্রেফতার করেছে। মহারাষ্ট্র অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াডও মুম্বইয়ের নিকটবর্তী এলাকা থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে। জঙ্গি গতিবিধির আভাস পাওয়ায় উত্তরাখণ্ড থেকেও পুলিশ বুধবার ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে।