রোহিঙ্গা নিয়ে দর কষাকষির পথে মায়ানমার

সম্প্রতি দিল্লির মদনপুর খাদারে রোহিঙ্গা শিবিরে গিয়েই এর প্রমাণ মিলেছে। অনেকে জানিয়েছেন, তাঁরা মায়ানমার থেকে তাড়া খেয়ে পৌঁছেছিলেন চট্টগ্রামে।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৫৫
Share:

ফাইল চিত্র।

কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ভবিষ্যত পুরোটা উজ্জ্বল হচ্ছে না সেই আলোয়! রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে এখন অনেকটা এমনই অবস্থা ভারতের।

Advertisement

রাষ্ট্রপুঞ্জের হস্তক্ষেপ, আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া, সর্বোপরি ভারতের সক্রিয় দৌত্যের পরে রোহিঙ্গাদের ফেরানো নিয়ে অদূর ভবিষ্যতে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে মায়ানমার। কিন্তু তারা স্পষ্ট করে দিয়েছে— যে ৪০ হাজার শরণার্থী ভারতে রয়েছেন, তাঁদের সবাইকে ফেরত নেওয়া হবে না। দর কষাকষি করবে মায়ানমার। ২০ শতাংশ দিয়ে তারা আলোচনা শুরু করবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে দিল্লির আশা, ৪০ হাজারের অন্তত অর্ধেককে ফেরানো যাবে। রাষ্ট্রপুঞ্জের পরামর্শ মেনে রাখাইন প্রদেশে তাঁদের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সড়ক এবং আবাসন পরিকাঠামো তৈরির দায়িত্ব নেবে দিল্লি।

সূত্রের বক্তব্য, ৪০ হাজারটা ভারতের কাছে এমন কিছু সংখ্যা নয় যে, তা নিয়ে বিরাট মাথাব্যথা রয়েছে। এই গণনার বাইরে যে রোহিঙ্গারা রয়েছেন, চিন্তা মূলত তাঁদের নিয়ে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মতে, প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ ঘটছে ভারতে। এই অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যেই মিশে থাকছেন রোহিঙ্গারা। প্রাথমিক ভাবে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে তাঁরা জীবিকার সন্ধানে চলে যাচ্ছেন দিল্লি, মুম্বই-এর মতো বড় শহরে। একটা অংশ ঘাঁটি গাড়ছেন জম্মু ও কাশ্মীরে। গোয়েন্দা-তথ্য অনুযায়ী, জইশ-ই-মহম্মদ-সহ বেশ কিছু পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনের খপ্পরে পড়ছেন এই রোহিঙ্গারা।

Advertisement

সম্প্রতি দিল্লির মদনপুর খাদারে রোহিঙ্গা শিবিরে গিয়েই এর প্রমাণ মিলেছে। অনেকে জানিয়েছেন, তাঁরা মায়ানমার থেকে তাড়া খেয়ে পৌঁছেছিলেন চট্টগ্রামে। সেখান থেকে কেউ নদিয়ায়, কেউ মালদহে, কেউ মুর্শিদাবাদে। শেষ পর্যন্ত কাজের খোঁজে, একটু ভাল ভাবে বাঁচার তাড়নায় এসে উঠেছেন দিল্লির এই প্রান্তে। অন্তত দিনমজুরি তো জুটছে।

সাউথ ব্লকের আশঙ্কা, মায়ানমার যদি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের রোহিঙ্গাদের কিছু অংশ ফেরত নিতে রাজিও হয়, তা হলেও তাঁরা ফিরবেন কি না সন্দেহ। এক কর্তার কথায়, ‘‘এঁরা হয়তো রওনা হবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারতেরই নানা প্রান্তে অনুপ্রবেশ করতে থাকবেন।’’

তবে কিছুটা হলেও মায়ানমার যে রোহিঙ্গাদের অদূর ভবিষ্যতে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছে, তার নেপথ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জের চাপ কাজ করছে বলে মনে করেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবের বিশেষ পরামর্শদাতা (মায়ানমার বিষয়ক) বিজয় নাম্বিয়ার। আজ এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘সে দেশের সেনা অন্তত এটুকু বুঝতে পারছে যে, এতে গোটা দুনিয়ায় ভুল সঙ্কেত যাবে। চিন পিছন থেকে মদত দিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু আখেরে সমস্যায় পড়তে পারে মায়ানমারই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement