দুই সঙ্গীর সঙ্গে শবনম। ছবি: সংগৃহীত।
মাথায় হিজাব। পায়ে নেই চটি। পিঠের ব্যাগে লাগানো রয়েছে গেরুয়া পতাকা। এ ভাবেই হেঁটে চলেছেন শবনম শেখ। সঙ্গী রমন রাজ শর্মা এবং বিনীত পাণ্ডে। তাঁদের গন্তব্য অযোধ্যা। রামকে পাওয়ার জন্য ১,৪২৫ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে চলার শপথ নিয়েছেন শবনম। জানিয়েছেন, রামের পুজো করতে হিন্দু হতে হয় না।
প্রতি দিনই ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার হাঁটেন শবনমেরা। প্রতিবেদন লেখার সময় পৌঁছেছেন মধ্যপ্রদেশের সিন্ধবায়। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে শবনমদের এই যাত্রা। অনেকে কুকথাও বলেছেন। মুসলিম হয়েও কেন তিনি অযোধ্যায় যাচ্ছেন, কেন রামের ভক্ত, তুলেছেন সেই প্রশ্ন। শবনম জানিয়েছেন, রামের পুজো করার জন্য হিন্দু হতে হয় না। ভাল মানুষ হতে হয়। শবনম এ-ও মনে করেন, একটি নির্দিষ্ট ধর্মই রামের পুজো করতে পারবেন, এ রকম কোনও কথা নেই। তাঁর কথায়, ‘‘রাম জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষের।’’ শুধু পুরুষেরাই এই যাত্রা করতে পারেন, এ কথাও মানেননি শবনম।
শবনমের যাত্রাপথ কিন্তু পুরোপুরি নিষ্কণ্টক নয়। পথে বিভিন্ন জায়গায় বাধার সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। মুসলিম হয়েও কেন অযোধ্যায় যাচ্ছেন, সেই নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন অনেকে। তবে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছে পুলিশ। অনেক জায়গাতেই পুলিশ তাঁদের রাতে আশ্রয়, খাবার দিয়েছে। মহারাষ্ট্রে একটি সংবেদনশীল এলাকা পার করে দিয়েছে খোদ পুলিশ। তবে অনেকেই আবার শবনমদের দেখে পথে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মুসলিমেরাও।
২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন হবে। প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে রামলালার। সে দিনই কি সেখানে পৌঁছতে চাইছেন শবনমেরা? তিনি স্পষ্টই জানিয়েছেন, কবে অযোধ্যায় পৌঁছবেন, সেই দিন স্থির করা হয়নি। যেমন প্রয়োজন, তেমন গতিতে চলবেন তাঁরা। আর তাঁর এই যাত্রা শুধুই নিজের অধ্যাত্মিক অন্বেষণের জন্য। এটা বোঝানোর জন্য যে, ধর্মের ঊর্ধ্বে রয়েছে ভক্তি।