গোমাংস নিয়ে গুজবের জেরে বিহারে গণপিটুনি খেলেন কয়েক জন সংখ্যালঘু গ্রামবাসী।
ভোজপুরের পর পশ্চিম চম্পারণ। ১৫ দিনের মধ্যে ফের গোমাংস নিয়ে গুজবের জেরে বিহারে গণপিটুনি খেলেন কয়েক জন সংখ্যালঘু গ্রামবাসী। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার দায়ে উল্টে আক্রান্তদের গ্রেফতার করল পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। ঘটনাটি ঘটে গত কাল পশ্চিম চম্পারণের ডুমরা গ্রামে। স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে পড়শিদের নিমন্ত্রণ করে গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ শাহাবুদ্দিন গোমাংস ভোজের আয়োজন করেছিলেন বলে গুজব রটেছিল। গত কাল লাঠিসোটা নিয়ে তাঁর বাড়ি ঘিরে ফেলে জনাপঞ্চাশেক লোক। স্লোগান ওঠে— ‘ভারত মাতা কী জয়’। হানাদারদের মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের স্থানীয় সংগঠনের কয়েক জন সদস্য ছিলেন বলে অভিযোগ। আশপাশের বাড়ির কয়েক জনকে শাহাবুদ্দিনের বাড়িতে ধরে নিয়ে আসা হয়।
শুরু হয় গণপিটুনি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে তাঁদের দিকে পাথর ছোড়া হয়। দাবি ওঠে, গোমাংস ভক্ষণে অভিযুক্তদের ‘বিচার’ করবে গ্রামের মানুষ। কোনওমতে আক্রান্ত ৭ জনকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে চার জনের গুরুতর আঘাত লেগেছিল। স্থানীয় হাসপাতালে সকলের চিকিৎসা করানো হয়। পরে ওই ৭ জনের বিরুদ্ধেই মামলা রুজু করে পুলিশ। চনপটিয়া থানার আধিকারিক রাজেশ ঝা জানান, ইচ্ছাকৃত ভাবে গ্রামের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মানুষের ধর্মীয় আবেগে আঘাত করার জন্য মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিধ্বংসী আরও ৬ যুদ্ধ-চপার পাচ্ছে স্থলসেনা
বিজেপির সমর্থনে বিহারে নীতীশ কুমার সরকারের শপথগ্রহণের ঠিক এক সপ্তাহের মধ্যে, গত ৩ অগস্ট ভোজপুরে অনেকটা এমনই কাণ্ড ঘটেছিল। বেআইনি ভাবে গরু জবাই করে গোমাংস পাচারের অভিযোগে একটি ট্রাক আটকে চালক, খালাসিকে বেধড়ক মারধর করা হয়। চালক-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রশাসনিক তরফে জানানো হয়, ১৯৫৫ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শ্রীকৃষ্ণ সিংহের আমলে জারি ‘দ্য বিহার প্রিজার্ভেশন অ্যান্ড ইমপ্রুভমেন্ট অফ অ্যানিম্যালস অ্যাক্ট’ মোতাবেক তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে একের পর এক এই ঘটনায় বিহারে সঙ্ঘ-রাজনীতির বাড়বাড়ন্তই দেখছেন বিহারের বিরোধী দলের নেতারা।