বিজেপির প্রবীণ নেতা মুরলী মনোহর জোশী।
নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ তাঁকে লোকসভার প্রার্থী করেননি। দলেও কোনও গুরুত্ব নেই। উত্তরপ্রদেশের ইলাহাবাদের (বর্তমান প্রয়াগরাজ) সঙ্গে নিজের ছয় দশকের সম্পর্কও এ বারে ছিন্ন করলেন বিজেপির প্রবীণ নেতা মুরলী মনোহর জোশী। প্রায় ছয় দশক ধরে ইলাহাবাদে তাঁর যে বাংলো ছিল, সেটিও বিক্রি করে দিলেন।
ইলাহাবাদের টেগোর টাউনে প্রায় ১২০০ বর্গগজের বাংলোটিতে জোশী প্রথম পা রাখেন ১৯৫৪ সালে। মেরঠ কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করে ১৯৫১ সালে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য ইলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন জোশী। পরে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর কাজ শুরু করেন। ১৯৫৪ সাল থেকে এই বাংলোতেই থাকতেন। রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পরে ইলাহাবাদে (প্রয়াগরাজ) গেলে অটলবিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আডবাণী, ভৈঁরো সিংহ শেখাওয়াতের মতো নেতারা এই বাড়িতেই উঠতেন। রামমন্দির আন্দোলনের সময় বিজেপির রাজনৈতিক গতিবিধির কেন্দ্রও ছিল এই বাংলোটি। কিন্তু জোশীর ঘনিষ্ঠ শিবির বলছে, এখন মোদী-শাহ জমানায় দলে কোনও গুরুত্ব না পেয়ে এই বাংলোটি বেচে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, জোশীর বাংলোটি বিক্রি হয়েছে প্রায় ৬ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকায়। চার জন মিলে বাংলো ও সংশ্লিষ্ট জমি কিনেছেন। নিরাপত্তার কারণে বাড়ির হাতবদলের জন্য নোটারির অফিসে যেতে পারেননি জোশী। যোগী আদিত্যনাথের সরকার অবশ্য তাঁর বাড়িতেই রেজিস্ট্রি করার অনুমতি দেয়। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘১৯৯৬, ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে ইলাহাবাদ কেন্দ্র থেকে জিতে এসেছিলেন জোশী। এর পর একবার হেরে যান। পরের দু’বার বারাণসী, কানপুর থেকে সাংসদ হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর কেন্দ্র ছিল এ বাড়িটিই। বিজেপির নতুন জমানায় তাঁকে আর প্রার্থী না করার পর এই বাড়ি রেখে দেওয়ারও কোনও অর্থ হয় না।’’
লোকসভা নির্বাচনের আগে আডবাণী-জোশীকে প্রার্থী না করার সিদ্ধান্ত হয়। যুক্তি হিসেবে দেখানো হয়, ৭৫ বছরের উপরে কাউকে প্রার্থী করা হবে না। কিন্তু সে বার্তা বিজেপির সংগঠনের দায়িত্বে থাকা নেতা রাম লালকে দিয়ে দেওয়া হয় দুই প্রবীণ নেতাকে। আডবাণী প্রকাশ্যে কিছু না বললেও জোশী নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়ে চার লাইনের একটি প্রকাশ্য নোট জারি করেন। তাতে বলা হয়, রামলাল তাঁর কাছে গিয়ে ভোটে না লড়ার কথা জানান। নরেন্দ্র মোদী কিংবা অমিত শাহ কেন তাঁকে গিয়ে সে কথা বললেন না, সেই ক্ষোভটি বকলমে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তখন। ভোটে তিনশোর বেশি আসন নিয়ে জিতে আসার পরে অবশ্য মোদী-শাহ তাঁদের মানভঞ্জনের চেষ্টা করেন। জোশীর ঘনিষ্ঠ শিবির আশায় আছে, যদি রাজ্যপাল করা হয় বর্ষীয়ান নেতাকে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।