—প্রতীকী ছবি।
অচেনা একটি নম্বর থেকে ফোন পেয়েছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করা এক মহিলা। ফোনটা ধরতেই তাঁকে ও পাশ থেকে তাঁকে বলা হয়, “ম্যাডাম, আমি ক্যুরিয়ার সংস্থা থেকে বলছি। তাইওয়ানে যে পার্সেল আপনি পাঠাচ্ছেন, কিছু সমস্যার জন্য সেটি পাঠানো যাচ্ছে না।” পার্সেল, তাইওয়ান— এ সব শুনেই মহিলা কেমন যেন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিলেন।
একটু ধাতস্থ হয়ে পাল্টা তিনি উত্তর দেন, “আমি কোনও পার্সেল পাঠাইনি।” এ কথা শুনে ক্যুরিয়ার কর্মী হিসাবে পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি মহিলাকে জানান, পার্সেল যদি তাঁর না হয়, তা হলে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তাঁরা। কারণ ওই পার্সেলে পাঁচটি পাসপোর্ট, দু’টি ক্রেডিট কার্ড এবং নেশার কিছু দ্রব্য রয়েছে। এ কথা শুনে মহিলা আরও স্তম্ভিত হয়ে যান।
মহিলাকে আরও জানানো হয় যে, এই ফোন কলটি পুলিশের কাছে ট্রান্সফার করা হচ্ছে। তখন আরও এক ব্যক্তির গলা শুনতে পান মহিলা। ওই ব্যক্তি নিজেকে নারকোটিক্স বিভাগের আধিকারিক হিসাবে পরিচয় দেন। মহিলাকে ওই ব্যক্তি বলেন, “আমি নারকোটিক্স দফতরে কর্মরত। আপনার আধার নম্বরটা বলুন তো?” এর পর মহিলা তাঁর আধার নম্বর বলতেই ওই ব্যক্তি তাঁকে বলেন, “ম্যাডাম, আপনার আধার নম্বর দুষ্কৃতী গ্যাংয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে লিঙ্ক করা।” এ কথা শুনে মহিলা যেন আকাশ থেকে পড়েন। তাঁকে আরও বলা হয়, “এই ঝঞ্ঝাট থেকে মুক্তি পেতে ইনস্ট্যান্ট মেসেঞ্জার অ্যাপ স্কাইপ ডাউনলোড করতে হবে।”
মহিলা উদ্বিগ্ন হয়ে স্কাইপ ডাউনলোড করেন নিজের ফোনে। সেই অ্যাপ খোলার জন্য ওই ব্যক্তি মহিলাকে একটি আইডি দিয়েছিলেন। সেই আইডির নাম ছিল ‘নারকোটিক্স বিভাগ’। ওই আইডি দিয়ে অ্যাপ খুলতেই ওই ব্যক্তি কয়েক জন দুষ্কৃতীর ছবি পাঠিয়ে জানান, এঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে মহিলার আধার যুক্ত আছে। এর পর মহিলার কাছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিষয় জানতে চাওয়া হয়। মহিলা ব্যাঙ্ক সম্পর্কে জানানোর কিছু ক্ষণের মধ্যে তাঁর দু’টি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৯৯ হাজার টাকা করে মোট ১ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হতেই মহিলা বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পড়েছেন। কিন্তু তত ক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছিল। এর পরই মুম্বই পুলিশের সাইবার শাখায় অভিযোগ দায়ের করেন মহিলা। পুলিশ ওই প্রতারণা চক্রের খোঁজ চালাচ্ছে।