শেষ পর্যন্ত রণে ভঙ্গ দিল বিজেপি-ই। স্নায়ুর যুদ্ধে হেরে বৃহন্মুম্বই পুরসভায় শিবসেনাকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস।
গত কাল অবধি নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকা বিজেপি আজ কিছুটা নাটকীয় ভাবেই জানিয়ে দিল, মুম্বই পুরসভায় তারা মেয়র কিংবা ডেপুটি মেয়র পদে প্রার্থী দেবে না। ক্ষমতাধর স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদও দাবি করবে না। আবার বিরোধী আসনেও বসবে না। বরাবরের মতো শিবসেনার প্রার্থীকেই সমর্থন করবে। ফডণবীসের বক্তব্য, রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে গত কালও যোগ দিয়েছিলেন শিবসেনার মন্ত্রী। ফলে রাজ্যে বিজেপি-শিবসেনা সরকারেরও কোনও বিপদই নেই।
বিজেপির এই ডিগবাজির প্রকৃত কারণটা কী? রাজ্য রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত অনেকেই বলছেন, যে ভাবে আগামী দিনে শিবসেনা-কংগ্রেস জোট বাঁধার সম্ভাবনা বাড়ছিল, তাকে অঙ্কুরে বিনাশ করতেই পিছু হটতে হয়েছে বিজেপিকে। এমনিতেই মুম্বই পুরসভার অঙ্কে মেয়র পদে নিজেদের প্রার্থী দিয়ে পরোক্ষে শিবসেনাকে সমর্থনের বার্তা দিয়েছিল কংগ্রেস-এনসিপি জোট। উদ্ধব ঠাকরে নিজেও বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে ‘একলা-চলো’ নীতি নেওয়ার নকশা তৈরি করে ফেলেছিলেন। উত্তরপ্রদেশের ফল দেখে জোট ভেঙে দেওয়ার কথা অনেককে জানিয়েও দিয়েছিলেন তিনি। এমনকী কংগ্রেস-এনসিপিকে সঙ্গে নিয়ে মহারাষ্ট্রের বাজেট অধিবেশনে অর্থ বিলের বিরোধিতা করে অনাস্থা আনারও তোড়জোড় চালাচ্ছিলেন সেনা-প্রধান।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের খাঁড়ার নীচে
কিন্তু জাত যাতে একেবারেই খোয়া না যায়, সে জন্য গালভরা ‘স্বচ্ছতা’র দাওয়াই দেওয়ারও চেষ্টা করেন দেবেন্দ্র। উদ্ধবকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে মহারাষ্ট্রের লোকায়ুক্তের সঙ্গে একজন অতিরিক্ত ডেপুটি-লোকায়ুক্ত নিয়োগের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। এবং নতুন এই আধিকারিককে দেওয়া হবে শুধু মুম্বইয়ের ভার। দেবেন্দ্র বোঝালেন, মুম্বই পুরসভার সব পদ শিবসেনাকে দিলেও দুর্নীতি দমনের রাশটি থাকবে তাঁরই হাতে।
কংগ্রেস অবশ্য গোটাটাই নাটক বলে দাবি করেছে। দলের নেতা সঞ্জয় নিরুপম বলেন, ‘‘বিজেপি আগাগোড়া শিবসেনাকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে
প্রচার করে এসেছে। এখন তাদের বলতে হবে, সেই দুর্নীতির হাতই তারা ধরল কেন?’’