খুনের পর সারা রাত ধরে মায়ের দেহের কাছে বসেছিল ছেলে। প্রতীকী ছবি।
প্রথমে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে খুনের চেষ্টা। তাতে কাজ না হওয়ায় বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা। কিন্ত তাতেও কোনও ভাবেবেঁচে যান বৃদ্ধা মা। এর পর একটি ছুরি দিয়ে গলার নলি কেটে মাকে খুন করে ছেলে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে খুন করার পর সাত ঘণ্টা ধরে মায়ের মৃতদেহের পাশেই বসেছিল ওই ব্যক্তি। সকাল হলে নিজেই পুলিশে ফোন করে আত্মসমর্পণ করে সে। মাকে খুনের অভিযোগ তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনা মুম্বইয়ের বলিভলি এলাকার। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম যোগেশ শিনয়। দু’বছর আগে স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ হয়ে যাওয়ার পর বরিভলি এলাকার একটি বস্তিতে মায়ের সঙ্গে ভাড়া থাকত সে। তার বাবা এবং ভাই আগেই মারা গিয়েছিলেন।
(আজকের তারিখে গুরুত্বপূর্ণ কী কী ঘটেছিল অতীতে, তারই কয়েক ঝলক দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)
মাকে খুনের অভিযোগে যোগেশের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে এমএইচবি কলোনি থানায় পুলিশ। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্থানীয় একটি হোটেলে অ্যাকাউন্ট্যান্টের কাজ করত ৫২ বছরের যোগেশ। তবে মাস দু’য়েক আগে সেই চাকরি ছেড়ে দেয় সে। এর পর থেকেই অবসাদে ভুগত।
ললিতা শিনয় নামের ৮০ বছরের ওই বৃদ্ধা উচ্চ রক্তচাপ ও স্পন্ডেলোসিসের সমস্যায় ভুগছিলেন। পুলিশের অনুমান, মায়ের চিকিৎসার খরচ বইতে না পেরেই তাঁকে খুন করেছে যোগেশ। এমএইচবি কলোনি থানার সিনিয়র ইনস্পেক্টর পণ্ডিত ঠাকারের দাবি, “মেডিক্যাল ফি নিয়ে প্রায়শই মায়ের সঙ্গে ঝগড়াঝাটি লেগে থাকত যোগেশের। ওই খরচ জোগাতে পারছিল না সে।”
আরও পড়ুন: ৮.৫ তীব্রতার ভূমিকম্পে টালমাটাল হবে হিমালয়! মহাপ্রলয়ের সতর্কবার্তা বিজ্ঞানীদের
যদিও যোগেশের প্রতিবেশীদের দাবি, মা এবং ছেলের মধ্যে খুবই সদ্ভাব ছিল। যোগেশ যে বাড়িতে ভাড়া থাকত, সেই বাড়ির মালিক দশর্না ঘোনে জানিয়েছেন, বছর দশেক ধরেইভাড়াটিয়া হিসাবে রয়েছেন তাঁরা। তবে মা বা ছেলে, কেউই পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গে খুব একটা মিশতেন না। পুলিশ জানিয়েছে, মাসে মাত্র ৩৫ টাকা করে ভাড়া দিতে হত যোগেশদের। তবে গত দু’বছরের সেই ভাড়াও দিতে পারেনি সে।
আরও পড়ুন: রাতে কুকুর কেন কাঁদে, সেটা কি আদৌ তাদের কান্না? কারণ জানলে অবাক হবেন
পুলিশের দাবি, মাকে খুনের কথা স্বীকার করেছে যোগেশ। পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিতে সে জানিয়েছে, মাকে খুনের উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার রাত ২টো নাগাদ তাঁকেঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয় সে। তবে তাতে কোনও লাভ হয়নি। এর পর বৃদ্ধার মুখে বালিশ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করতে যায়। তবে তাতেও সফল হয়নি সে। এর পর কাগজ কাটার ছুরি নিয়ে মায়ের গলার নলি কেটে ফেলে। এর পর সারা রাত ধরে মায়ের দেহের কাছে বসেছিল সে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ নিজেই পুলিশকে ফোন করে যোগেশ। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)