—প্রতীকী চিত্র।
ফুটপাত থেকে শিশুকে অপহরণ করে অন্য রাজ্যে পাচার। তার পর নিঃসন্তান দম্পতির কাছে তাকে বিক্রি। মুম্বইয়ে এই কুকর্ম ঘটিয়েছেন এক চিকিৎসক। তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে এই কাজে সহযোগিতা করার জন্য এক অটোরিকশা চালক এবং তার সহযোগীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১১ অক্টোবর অন্ধেরির গোখেল ব্রিজের নীচে ফুটপাত থেকে শিশুটি নিখোঁজ হয়ে যায়। ঘুম ভেঙে ছেলেকে পাশে না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন শিশুটির পরিবারের লোকজন। শুরুতে এলাকাতেই তন্নতন্ন করে খুঁজতে শুরু করেন তাঁরা। তার পর গত সপ্তাহে জুহু পুলিশের দ্বারস্থ হন।
অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে পুলিশ। কিন্তু যে এলাকা থেকে শিশুটি নিখোঁজ হয়ে যায়, সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজে কিছু না মেলায়, পার্শ্ববর্তী এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ। তাতেই একটি অটোরিকশায় শিশুটিতে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধরা পড়ে। রেজিস্ট্রেশন নম্বর ধরে খোঁজ করতেই অন্ধেরির গাঁওদেবী দোঙ্গার এলাকায় অটোটির হদিশ মেলে। অটোর চালক রমেশ বনপতি এবং তাঁর সহযোগী মহেশ দিত্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: নামেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ, সময় এলেই পদত্যাগে বাধ্য করবে বিজেপি: শিবসেনা
ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, রমেশ আসলে তেলঙ্গানার বাসিন্দা। মহম্মদ বসিরুদ্দিন নামের নলগোন্ডার এক চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। কোনও শিশুকে এনে দিতে পারলে মোটা টাকা দেবেন বলে তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। বেশ কিছু দিন খোঁজাখুঁজির পর অন্ধেরি থেকে ওই শিশুটিকে অপহরণ করে নলগোন্ডায় পৌঁছে দিয়ে আসেন তাঁরা।
রমেশের কাছ থেকে পাওয়া ঠিকানা ধরে এর পর তেলঙ্গানায় ওই চিকিৎসকের কাছে পৌঁছয় মুম্বই পুলিশ। স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় সোমবার বসিরুদ্দিনকে হেফাজতে নেন তাঁরা। জেরার মুখে অপরাধ কবুল করেন তিনি। জানান, ৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে এক নিঃসন্তান দম্পতিকে শিশুটিকে বিক্রি করে দিয়েছেন। তার মধ্যে থেকে ১.৫ লক্ষ টাকা রমেশ এবং তাঁর সহযোগীকে দিয়েছেন তিনি।
এর পর ওই দম্পতির কাছে পৌঁছয় পুলিশ। কিন্তু তাঁরা জানান, শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছে, সে কথা জানতেনই না তাঁরা। তাঁরা বাচ্চা দত্তক নিতে চেয়েছিলেন। এ কাজে তাঁদের সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়ার জন্য টাকা লাগবে বলে জানিয়েছিলেন। সেই মতোই টাকা দিয়েছিলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: অন্য দলে যান বা নতুন দল গড়ুন, সিব্বলকে হুঁশিয়ারি অধীরের
শিশুটিকে ওই দম্পতির কাছ থেকে নিয়ে এসে তার পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের খাতায় আগে কখনও নাম ওঠেনি রমেশ এবং মহেশের। তবে আগেও বাচ্চাচুরি সংক্রান্ত কাজে তারা লিপ্ত ছিল কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বসিরুদ্দিন এই ধরনের ঘটনা আগে ঘটিয়েছেন কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।