পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের বাইরের দেওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। —ফাইল চিত্র।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের বাইরের দেওয়ালে একাধিক ফাটল দেখা দিয়েছে। পড়েছে শ্যাওলার পুরু আস্তরণও। সমস্যা এড়াতে তড়িঘড়ি ডাক পড়েছে পুরাতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই) সাহায্য চেয়েছে ওড়িশা সরকার। তারাই দেওয়ালের ফাটল মেরামত করবে।
পুরীতে জগন্নাথের মূল মন্দিরের বাইরে মন্দিরের চৌহদ্দি নির্দিষ্ট করে যে পুরু দেওয়াল রয়েছে, তার নাম মেঘনাদ পচেরী। বছরের পর বছর ধরে মূল মন্দিরকে সুরক্ষিত করে আসছে এই দেওয়াল। কিন্তু সম্প্রতি এই দেওয়ালে একাধিক ফাটল লক্ষ করা গিয়েছে। যা নিয়ে মন্দির কর্তৃপক্ষ উদ্বিগ্ন।
দ্বাদশ শতকে নির্মিত মন্দিরে কী ভাবে এমন ফাটল দেখা দিল? জগন্নাথ মন্দিরের ভিতরে আনন্দবাজার নামের একটি অঞ্চল রয়েছে। সেখান থেকে জগন্নাথের প্রসাদ বিক্রি করা হয়। ওই অঞ্চল থেকে নোংরা বর্জ্য জল বাইরের দেওয়ালের ফাটল দিয়ে চুঁইয়ে পড়ছে বলে খবর। দেওয়ালে দীর্ঘ দিন ধরে জমছে শ্যাওলা। তার আস্তরণ আরও পুরু হচ্ছে, আরও ছড়িয়ে পড়ছে দেওয়াল জুড়ে। দেওয়াল ভেজা থাকায় ক্রমে ক্ষতি হচ্ছে। অনেকের মতে, দীর্ঘ দিনের অযত্নেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ওড়িশা সরকার অবশ্য মনে করছে, এএসআইয়ের অনুমতি ছাড়া জগন্নাথ মন্দিরে এমন কোনও কাজ করা হয়েছে, যার ফলে এই ফাটল। তদন্ত করে দেখছে সরকার।
মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং বিশেষজ্ঞেরা পুরীর মন্দিরের এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। হেরিটেজ সংরক্ষণকারীরা দ্রুত মন্দিরের আপাদমস্তক মূল্যায়ন এবং পূর্ব পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। জগন্নাথ মন্দির ওড়িশার অন্যতম প্রধান হেরিটেজ এবং সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করবে ওড়িশা সরকারও। ভবিষ্যতে যাতে মন্দির কাঠামোর আর কোনও ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করাই এখন লক্ষ্য।
রাজ্যের আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন বলেন, ‘‘কেন দেওয়ালে ফাটল দেখা দিল, আমরা তদন্ত করে দেখছি। দেওয়াল মেরামতের প্রস্তুতি নিচ্ছে এএসআই। কিন্তু কেন দেওয়াল ফাটল, আমরা খতিয়ে দেখব। আমাদের অনুমান, এএসআইয়ের অনুমতি ছাড়াই মন্দিরে কিছু কাজ করা হয়েছিল, যার ফলে দেওয়ালের এই অবস্থা হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, এএসআই আপাতত অগ্রাধিকার দিয়ে দেওয়াল মেরামত করবে। এই পরিস্থিতির নেপথ্যে কোনও বেআইনি কাজ খুঁজে পেলে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে ওড়িশা সরকার।