‘নাম আছে তো?’ অসমের মরিগাঁওয়ে বৃদ্ধের চোখেমুখেও উদ্বেগ। ছবি: এপি।
নাগরিকপঞ্জির অসঙ্গতির ধাক্কায় দিশেহারা পুরনো পরিবার।
ব্রিটিশ আমলে অসম থেকে প্রথম এরি ও মুগা সিল্ক রফতানি শুরু করেন রাধাকৃষ্ণ সরস্বতী। বাঙালি ব্যবসায়ী সরস্বতী পরিবারের তৈরি ‘সরস্বতী শাড়ি’ পরানো হত কামাখ্যা মূর্তিকে। সেই পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম, পানবাজারের ব্যবসায়ী রুদীপ শর্মা এখন ভাবছেন, সত্তর ছুঁই ছুঁই মাকে নিয়ে কোন ফরেনার্স ট্রাইবুনালে যাবেন? কারণ, জলপাইগুড়ি থেকে সরস্বতী পরিবারে বিয়ে হয়ে আসা রুনা সরস্বতীর নাম এনআরসিতে নেই। তাঁর বোন রত্নার নাম কিন্তু তালিকায় আছে।
রায়বাহাদুর কালীচরণ সেন কামরূপ অ্যাকাডেমি স্কুল, পল্টনবাজার বেঙ্গলি স্কুল, কামরূপ অনুসন্ধান সমিতি, সনাতন ধর্মসভার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর চতুর্থ প্রজন্ম শুভ্রজ্যোতি সেনগুপ্তের স্ত্রী দোলন তালিকা থেকে বাদ। আদতে তিনি আরামবাগের মেয়ে। বাদ পড়েছেন শুভ্রের কাকিমা স্বাতী-ও। একই ভাবে এলাকার লাহিড়ী পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম রেলকর্তা সুগতের মা রুমু, স্ত্রী অনন্যাও বাদ।
নজর চূড়ান্ত এনআরসি তালিকায়। শনিবার কামরূপে। ছবি: পিটিআই।
ভাস্করনগরের বাসিন্দা মুকুল বসু আর বঙাইগাঁওয়ের শেফালি বৈদ্য দুই বোন। জলপাইগুড়িতে আদি বাড়ি। কিন্তু শেফালির নাম থাকলেও মুকুলের নাম বাদ পড়েছে। পলতা থেকে এসে গুয়াহাটিতে থিতু হওয়া শম্ভু মজুমদারের স্ত্রী, দুই মেয়ের নাম থাকলেও শম্ভু বাদ।
২০ বছর ধরে গুয়াহাটিতে থাকেন বক্সার সৈয়দ রাজু কাজি। স্ত্রীর নাম থাকলেও তাঁর এবং সাত বছরের ছেলের রাজমুন কাজির নাম বাদ পড়েছে। লখিমপুরের বনেদি ব্যবসায়ী পরিবারের কন্যা নূরি হুসেনের বিয়ে হয়েছে গুয়াহাটিতে। তাঁর নামও বাদ।
এরপরের গন্তব্য তাই ট্রাইবুনাল আর আদালত।