হবু চিকিৎসকদের নীতিশিক্ষার পাঠ

এমসিআইয়ের বোর্ড অফ গভর্নরসের কর্তারা জানিয়েছেন, ওয়ার্ডে বা আউটডোরে রোগী ও পরিবারের সঙ্গে চিকিৎসকের দুর্ব্যবহারের অসংখ্য অভিযোগ তাঁরা পান। এমবিবিএসের নতুন পাঠ্যক্রমে এই প্রবণতা আটকানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৮
Share:

প্রতীকী চিত্র।

অসুস্থ বা দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত কোনও মানুষের মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে। সেই অবস্থায় তাঁর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অসুস্থ মানুষকে দিয়ে তাঁর প্রাণ বাঁচানো যেতে পারে। কিন্তু সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল, মস্তিষ্কের মৃত্যু হওয়া মানুষটির আত্মীয়দের সঙ্গে ওই মুহূর্তে কথা বলে এবং বুঝিয়ে অঙ্গদানের সম্মতি আদায় করা। অত্যন্ত স্পর্শকাতর সেই সময়ে শুধু কথোপকথনের ধরনের উপর অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এমবিবিএসের নতুন পাঠ্যক্রমে হবু চিকিৎসকদের এই কথোপকথনের পন্থা বা কৌশল শেখানো হবে।

Advertisement

প্রায় ২১ বছর পর দেশে এমবিবিএসের পাঠ্যক্রম বদলাচ্ছে। ‘মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার’ (এমসিআই) বোর্ড অফ গভর্নরসের চেয়ারম্যান তথা নীতি আয়োগের সদস্য বিনোদ কুমার পল দিল্লি থেকে ফোনে জানান, রোগী ও পরিবারের সঙ্গে সুব্যবহার, নীতিশিক্ষার মতো বিষয়গুলি এই প্রথম পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বিনোদ কুমারের বক্তব্য, ‘‘চিকিৎসাকে আর পাঁচটা পেশার সঙ্গে এক করে ফেললে চলবে না। এক জন সু-চিকিৎসককে যেমন ঠিক ওষুধ দিতে বা ভাল অস্ত্রোপচার করতে হবে, তেমনই সহানুভূতিশীল হতে হবে। সুব্যবহার করতে হবে।’’

এমসিআইয়ের বোর্ড অফ গভর্নরসের কর্তারা জানিয়েছেন, ওয়ার্ডে বা আউটডোরে রোগী ও পরিবারের সঙ্গে চিকিৎসকের দুর্ব্যবহারের অসংখ্য অভিযোগ তাঁরা পান। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত পরিবারের, অল্পশিক্ষিত মানুষের সঙ্গে কিছু চিকিৎসক মাত্রাতিরিক্ত রুক্ষ ব্যবহার করেন। এমবিবিএসের নতুন পাঠ্যক্রমে এই প্রবণতা আটকানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে। বিনোদের কথায়, ‘‘এ বার থেকে প্রথম বর্ষের ছাত্রদেরও ওয়ার্ডে গিয়ে কাজ করতে হবে। সিনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে থেকে হাসপাতালের পরিবেশ, সমস্যা, তৎপরতা—সব কিছুর সঙ্গে প্রথম থেকে একাত্ম হতে হবে। স্থানীয় ভাষা শিখতেই হবে।’’ বিনোদের কথায়, ‘‘শুধু অঙ্গদানের কাউন্সেলিংই নয়, রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি বা মৃত্যুর খবর আত্মীয়দের জানানোর ধরন থাকে। তাতে রুক্ষতা থাকলে, সহানুভূতির অভাব হলে ক্ষোভ তৈরি হবে। হবু ডাক্তারদের ‘ব্রেকিং দ্য ব্যাড নিউজ’ এর প্রক্রিয়া শিখতেই হবে।’’

Advertisement

এ ছাড়া, এত দিন ওয়ার্ডের রোগীদের ইঞ্জেকশন দিয়ে বা ক্যাথিটার লাগিয়ে হবু চিকিৎসকেরা হাত পাকাতেন। অনেক সময় আনাড়ি হাতে বিভ্রাটের অভিযোগ উঠত। নতুন পাঠ্যক্রমে হবু ডাক্তারদের ‘ম্যানিকুইন’ দেওয়া হবে। তার উপরেই তাঁরা হাত পাকাবেন। কিছুটা দক্ষ হলে তবেই হবু ডাক্তারদের ওয়ার্ডে হাতেকলমে পরিষেবা দিতে দেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement