প্রবল ধারায় বর্ষা ঢুকে পড়ল কেরলে, আশায় আশায় বসে আছে বঙ্গ

অবশেষে বর্ষা ঢুকল মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে। গত কয়েকদিন ধরেই কেরলে ভাল বৃষ্টি পড়ছিল। আবহবিদেরা আগেই জানিয়েছিলেন, বর্ষা কেরলের দিকে দ্রুত অগোচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৬ ১৫:৪৮
Share:

অবশেষে বর্ষা ঢুকল মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে।

Advertisement

গত কয়েকদিন ধরেই কেরলে ভাল বৃষ্টি পড়ছিল। আবহবিদেরা আগেই জানিয়েছিলেন, বর্ষা কেরলের দিকে দ্রুত অগোচ্ছে। এটা তারই ইঙ্গিত। বুধবার মৌসম ভবন জানিয়ে দিল, কেরল দিয়ে এদিন সকালেই দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু ঢুকে পড়েছে মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে।

স্বাভাবিক নিয়মে কেরল দিয়ে বর্ষা ঢোকার কথা ১ জুন। কিন্তু মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় রুয়ান আরব সাগরের বায়ুপ্রবাহের গতিকে প্রভাবিত করায় বর্ষার গতিপ্রকৃতি এবার প্রথম থেকেই অন্য খাতে বইছে। মৌসম ভবন তখনই জানিয়ে দিয়েছিল, কেরল দিয়ে মূল ভূখণ্ডে বর্ষা ঢুকতে দেরি হবে। সেই মতো নির্দিষ্ট সময়ের ৭ দিন পরে অবেশেষে মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে পৌঁছেছে বর্ষা।

Advertisement

এ দেশে বর্ষা ঢোকার পথ দুটি। প্রধান পথটি কেরল পথ। অন্য পথটি আন্দামান-মায়ানমারের ঘুরপথ। ওই পথ দিয়ে বর্ষা মায়ানমার-উত্তর পূর্বাঞ্চল হয়ে নেমে আসে উত্তরবঙ্গের দিকে। ওই পথে অবশ্য নির্দিষ্ট দিন অর্থাৎ ১৫ মে বর্ষা ঢুকেছিল আম্দামানে। বঙ্গোপসাগর-মায়ানমার হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ঢোকার কথা ছিল ১ জুন। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় রুয়ান সেই পথেও বর্ষা ঢোকার গতিকে প্রভাবিত করেছে। তাই উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও এখনও পৌঁছয়নি বর্ষা। সেই পথে দুই একদিনের মধ্যেই বর্ষা ঢুকে যাবে বলে আশা করছেন আবহবিদেরা।

আরও পড়ুন: পর্যটক টানতে আস্ত বিমান সমুদ্রে ডুবিয়ে দিল তুরস্ক!

দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এখনও তাপপ্রবাহ চলছে। সেখানে বর্ষার ঘাটতি এই মুহূর্তে ৯১ শতাংশ। পূর্ব ও উত্তরপূর্ব ভারতেও ঘাটতি রয়েছে ৭৯ শতাংশ। সারা দেশে ঘাটতির পরিমান ৩৫ শতাংশ। তাই বর্ষা ঢুকতে আর কত দেরি রয়েছে তার জন্য উদ্বেগে ছিল কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক। এদিন কেরল দিয়ে বর্ষা মূল ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ায় সেই দুশ্চিন্তা কিছুটা কাটল বলে মনে করছেন কৃষি-কর্তারা। তবে কেরল থেকে কী ভাবে ও মৌসুমী বাযু উপরের দিকে উঠে আসে তার উপরেই নির্ভর করবে গোটা দেশে বর্ষা-ভাগ্য।

কেরল থেকে স্বাভাবিক নিয়মে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা পৌঁছতে সময় নেয় সাত দিন। অর্থাৎ সেইমতো ১৫ জুন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা চলে আসার কথা। তবে তা আসবে কী না তা এই মুহূর্তে বলতে পারছেন না আবহবিদেরা। এক আবহবিদের কথায়, ‘‘আগামী সাত দিন বায়ুপ্রবাহের গতিপ্রকৃতি কেমন থাকে তার উপরেই নির্ভর করছে সব।’’

এবার সারা দেশে স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টি হবে হবে বলেই সাম্প্রতিকতম পূর্বাভাসে জানিয়ে দিয়েছে মৌসম ভবন। কিন্তু সেই বৃষ্টি কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে তার উপরে নির্ভর করছে দেশে কৃষির ভবিষ্যৎ। গত বছর অগস্ট-সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সারা দেশে বৃষ্টি হলেও, সেই বৃষ্টির মধ্যে কোনও সামঞ্জস্য ছিল না। কোথাও অতিবৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বন্যায় মাঠের ফসল নষ্ট হয়েছে। কোথাও আবার বৃষ্টির পরিমাণ অত্যন্ত কম। সেখানে মাঠের ফসল জ্বলে গিয়েছে। বর্ষায় বৃষ্টি কতটা হবে তার পূর্বাভাস দেওয়া গেলেও, তা সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে কী না সে ব্যাপারে মৌসম ভবন কিন্তু নীরব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement