—ফাইল চিত্র।
এ বারে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে যোগে বসবেন মোদী।
পরিকল্পনার কোনও পরিবর্তন না হলে জুন মাসে ‘যোগ দিবসে’র মূল অনুষ্ঠানটি হবে লখনউতে। আর সেখানে বসে যোগাসন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘যোগ দিবস’-এর আয়োজক মোদী সরকারের মন্ত্রী শ্রীপাদ নাইক আজ বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে এ বারে আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের মূল অনুষ্ঠানটি হবে লখনউতে। প্রধানমন্ত্রী সেখানেই যাবেন। তবে এখনও সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত নয়।’’ মোদী সরকারের উদ্যোগেই রাষ্ট্রপুঞ্জ ২১ জুনকে ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তার পর ২০১৫ সালে দিল্লির রাজপথে আর গত বছর চণ্ডীগড়ে মূল অনুষ্ঠানে বসে যোগ করেছেন মোদী নিজেই।
সরকারি সূত্রের মতে, উত্তরপ্রদেশের ভোটে বিপুল সাফল্যের পরেই এ বারের যোগ দিবসের মূল অনুষ্ঠানটি লখনউয়ে করার ভাবনা শুরু হয়েছে। বাবা রামদেবের সঙ্গেও এই নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে সরকার। লখনউয়ে মূল অনুষ্ঠানটি হলেও সরকারের লক্ষ্য, গোটা দেশেই এটিকে মহোৎসবে পরিণত করা। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘গত দু’বছর যোগ দিবস হলেও পুরোদস্তুর বিজেপি শাসিত কোনও রাজ্যে এই অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে এ বারে সেই সুযোগ এসেছে। মোদী ও যোগীর জুটিতে এ বারের যোগ-মহোৎসব নতুন মাত্রা পেতে পারে।’’
আরও পড়ুন: থানার হাল দেখতে হাজির যোগী, পুলিশকে চাপ নয়, সাংসদদের নির্দেশ মোদীর
এমনিতেই মোদী ও যোগীর মধ্যে অনেক মিল। উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের সময় একের পর এক মন্দির দর্শন, রুদ্রাক্ষের মালা পড়ে গরুকে খাওয়ানো— ব্যক্তিগত বিশ্বাসকে প্রকাশ্যে চড়া দাগে নিয়ে গিয়ে সুকৌশলে হিন্দুত্বের বার্তাই ছড়িয়েছেন মোদী। আবার লখনউয়ের মুখ্যমন্ত্রী নিবাসে পুরোহিতদের নিয়ে এসে যে ভাবে যজ্ঞ, শুদ্ধিকরণ শুরু করেছেন যোগী, তার পিছনেও একই বার্তা কাজ করছে। সামনের সপ্তাহে রামনবমী ব্রত। মোদী হোক বা যোগী কেউই এ নিয়ে পিছিয়ে থাকতে চান না। ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল ভাত ছোঁবেন না দুজনেই। তার পাশাপাশিই কসাইখানা বন্ধ, অ্যান্টি-রোমিও স্কোয়াডের পিছনেও হিন্দুত্বের ভাবনা লুকিয়ে আছে বলেই বিরোধীদের অভিযোগ।
এহেন মোদী-যোগী জুটির তত্ত্বাবধানে এ বারে যোগ দিবসের আয়োজনের পিছনেও হিন্দুত্ব উস্কে দেওয়ার অভিসন্ধিই দেখছে বিরোধীরা। যোগের অনুষ্ঠানে ‘সূর্য নমস্কার’, ‘ওম’ মন্ত্র উচ্চারণ নিয়ে গোড়া থেকেই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তখন থেকেই বিরোধীরা বলে আসছেন, যোগের মাধ্যমে আসলে হিন্দুত্বের এজেন্ডাকেই প্রসার করতে চাইছেন মোদী। যোগী-রাজ্যে হিন্দুত্বের সেই সুরকেই তিনি আরও চড়া সুরে বাঁধছেন কি না, সে দিকেই এ বার নজর থাকবে সকলের।