সিমেন্স কর্ণধার জো কাইসারের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী। সোমবার বার্লিনে। ছবি: পিটিআই।
জার্মানিতে শিল্পপতিদের সামনে ‘নতুন’ ভারতের বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ফ্রান্স থেকে জার্মানি—এ বার বিদেশ সফরের শুরু থেকেই ভারতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে জোরালো ভাবে সওয়াল করছেন মোদী। গত কাল রাতেই বিশ্বের সব থেকে বড় শিল্প বাণিজ্য মেলা হ্যানোভার মেসের উদ্বোধন করেছেন মোদী ও জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল। শিল্পমেলায় ভারত অংশীদার দেশ হওয়ায় মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র ভাবনাকে এখানে বিরাট ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আর আজ ভারত-জার্মান শিল্পপতিদের সভায় প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, ‘‘পুরনো ধারণা ঝেড়ে ফেলে এক বার আসুন। দেখবেন, ভারত এখন একটা বদলে যাওয়া দেশ।’’
জমি বিল নিয়ে দেশের সংসদে এনডিএ সরকারের কোণঠাসা অবস্থার কথা বিদেশের শিল্পপতিদের সামনেও পৌঁছে গিয়েছে বুঝেই এ দিন পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর ব্যাখ্যা, জমি অধিগ্রহণের সময়ে কৃষক ও জমির মালিকদের ক্ষতি হোক, সরকার তা চাইছে না। বরং যুক্তিসঙ্গত একটি কাঠামোর মধ্যে অধিগ্রহণের বিষয়টিকে নিয়ে আসতে চাইছে সরকার। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা না দিলেও শিল্পপতিদের মোদী বোঝাতে চান, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-য় বিশ্বাস রেখে তাঁরা ভারতে কারখানা তৈরি করতে এলে জমি পেতে সমস্যা হবে না।
শিল্পপতিদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রয়োজনীয় অনুমোদনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার পরিবেশ তাঁরা ভারতে খুঁজে পাবেন। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’কে ‘সময়ের দাবি’ আখ্যা দিয়ে জার্মানির শিল্পপতিদের সভায় মোদীর আশ্বাস, ভারতকে বিশ্বের অন্যতম শিল্প উৎপাদন ক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজন হলে দেশের আইনকানুন সংশোধন করতেও রাজি সরকার। মেরকেলকে নিয়ে এ দিন সকালে হ্যানোভার মেলায় ভারতের প্যাভেলিয়নের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর মন্তব্য, ‘‘ডেমোগ্রাফি (জনসংখ্যা), ডেমোক্র্যাসি (গণতন্ত্র) ও ডিম্যান্ড (চাহিদা) বিশ্বের সামনে ভারতকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।’’ হ্যানোভারের মেলায় যোগ দিয়েছে প্রায় ৪০০টি ভারতীয় সংস্থা। ভারতীয় চায়ের পেয়ালা হাতে দু’দেশের বাণিজ্য সম্ভাবনা নিয়ে মেরকেলের সঙ্গে আলোচনায় বসেন মোদী। পরে যৌথ বিবৃতিতে শিল্প ক্ষেত্রে ভারত ও জার্মানির সংস্থাগুলির সহযোগিতার বার্তা দেওয়া হয়। হ্যানোভার থেকে এ দিনই বার্লিনে পৌঁছন মোদী। সেখানে শিল্পসংস্থা সিমেন্সের দফতরে যান তিনি। এ দিন দিল্লিতে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকর জানান, এ নিয়ে ফ্রান্সের সরকারের সঙ্গেই আলোচনা করবে ভারত। বিমান তৈরি করছে যে সংস্থা, তাদের সঙ্গে নয়, কথা হবে সরকারি পর্যায়ে।