‘নরেন্দ্র মোদীর জয় বলবেন না।’ বলছেন কে? খোদ নরেন্দ্র মোদী!
পাঁচ রাজ্যে ভোটে হারের পরেই প্রধানমন্ত্রীর সুর বদলে গিয়েছে। ভোটের ফল প্রকাশের তিন দিনের মাথায় লোকসভা ভোটের প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবে নেমে পড়লেন দলের বুথ পর্যায়কে মজবুত করতে। কেরলের কয়েকটি বুথের কর্মীদের সঙ্গে আজ দিল্লি থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে দীর্ঘক্ষণ কথাও বলেন তিনি। আর সেখানেই এক কর্মী যখন তাঁর নামে জয়ধ্বনি দেন, তাঁকে থামিয়ে মোদী বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর জয় নয়, বলুন ভারতমাতার জয়।’’
বিরোধীরা বলছেন, ২০১৪-র ভোটের প্রচারের সময় থেকেই কর্মীদের জয়ধ্বনি তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতেন মোদী। এই সে দিন পর্যন্ত ছবিটা একই রকম ছিল। কিন্তু পাঁচ রাজ্যের ভোটে হারতেই সুর বদলে গেল! বিজেপি নেতৃত্বও বুঝতে পারছেন, দলের কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অনেক সমর্থক নোটায় ভোট দিয়েছেন। যা চিন্তা বাড়িয়েছে মোদী-শাহের। তাঁরা বুঝতে পারছেন, মানুষের মন জেতার আগে কর্মীদের মন জিততে হবে। সেই কারণেই কর্মীদের চাঙ্গা করতে আসরে নামেন খোদ মোদী। কর্মীদের সঙ্গে তাঁর এই আলাপচারিতায় অবশ্য পাঁচ রাজ্যের হার নিয়ে কোনও কথা হয়নি। কারণ ওই নিয়ে প্রশ্ন ওঠেইনি! তাই মোদীও কিছু বলেননি। কর্মীদের মোদী বলেন, ‘‘মানুষের কথা শুনলে মানুষও আমাদের কথা শুনবে। মানুষের কথা বুঝতে হবে। পাশে থাকতে হবে।’’
এর পরেই তিনি টানেন অটলবিহারী বাজপেয়ীর প্রসঙ্গ। মোদীর কথায়, ‘‘বাজপেয়ী বলেছিলেন, কর্মীদের এক পা রেলে এবং আর এক পা জেলে হওয়া উচিত।’’ অর্থাৎ কর্মীদের এক দিকে যেমন প্রচার-প্রসারে সর্বদা ঘর ছেড়ে বাইরে যেতে প্রস্তুত থাকতে হবে, তেমনি মানুষের স্বার্থে জেলেও যেতে হবে। মোদীর কথায়, ‘‘এখন ‘এভরি পার্সন ইম্পর্ট্যান্ট’।’’ শবরীমালা নিয়ে এক বিজেপি কর্মীর আত্মহত্যার উদাহরণ তুলে হিন্দুত্বের সুড়সুড়ি দিতেও ছাড়েননি মোদী। কর্মীদের সঙ্গে মোদীর আলাপচারিতা প্রসঙ্গে কংগ্রেসের কটাক্ষ, এ তো রাহুল গাঁধীর কথা বলছেন উনি! রাহুলই তো বলেছেন, মোদী মানুষের কথা শোনেন না। তাই মানুষ কী চাইছেন, জানেন না তিনি। সাড়ে চার বছর পরে রাহুলের পরামর্শ মেনে মানুষের কথা শোনার ইচ্ছে হয়েছে মোদীর!
আরও পড়ুন: সন্দেহ নেই রাফালে, বলল সুপ্রিম কোর্ট