কাশ্মীরের সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে দুই পড়শি দেশের মনোমালিন্য এখন তুঙ্গে। আর এই পরিস্থিতিতে পড়শির সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার দিকে ইঙ্গিত দিল নয়াদিল্লি।
আজ আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানির সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে বৈঠক করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই আলোচনায় বারবারই উঠে এসেছে পাকিস্তান ও সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ। তবে নাম না করে। গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসবাদ দমনে কী কী পদক্ষেপ করা যায়, বৈঠকে সে নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান।
আর দু’দেশই এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েছে, কী ভাবে রাজনৈতিক স্বার্থ কায়েমের জন্য সন্ত্রাসবাদকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে দক্ষিণ এশিয়ারই এক দেশ। সরাসরি নাম না নিলেও এই ভাবেই ইসলামাবাদকে আজ চাপে রাখার চেষ্টা করল ভারত-আফগানিস্তান।
বৈঠক শেষে ভারতের বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর সাংবাদিকদের জানান, দক্ষিণ এশিয়া আর তার আশপাশের এলাকার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়েই দু’দেশের প্রধানদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট দেশ দ্বারা পরিচালিত সন্ত্রাসবাদ যে ভাবে গোটা এলাকার শান্তি ও স্থিতিশীলতায় বিঘ্ন ঘটাচ্ছে তা নিয়ে দু’দেশই ভীষণ উদ্বিগ্ন।
তবে সেই সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে যে দু’দেশই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তা-ও জানান বিদেশ সচিব। কাশ্মীর উপত্যকায় চলা সাম্প্রতিক গোলমালের ফলে নয়াদিল্লির সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরেই দূরত্ব বেড়ে চলেছে ইসলামাবাদের। এই অবস্থায় পাকিস্তানের পড়শি দেশ আফগানিস্তানের সঙ্গে নয়াদিল্লির সুসম্পর্ক তৈরির চেষ্টা কৌশলগত ভাবে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে শুধু সন্ত্রাসবাদ বা তাতে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদতের প্রসঙ্গই নয়, আজকের বৈঠকে উঠে এসেছে দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার কথাও। বৈঠকের পরে যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানকে ১০০ কোটি ডলার আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত। সে দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, শক্তি ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য ওই অর্থ বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই জানিয়ে দিয়েছেন বিদেশসচিব। দু’দেশের মধ্যে তিনটি বিষয়ে মউও স্বাক্ষরিত হয়েছে।