দলিত নির্যাতনের প্রশ্নে ঘরে-বাইরে চাপে মোদী

দাদরির ছায়া এ বার কর্নাটকে। গুজরাতের উনায় দলিত নিগ্রহ নিয়ে বিতর্ক চলছেই। তার মধ্যেই গোমাংস খাওয়ার অভিযোগে কর্নাটকের চিকমাগালুরে দলিত একটি পরিবারের উপর হামলা চালালো ৪০-৫০ জনের একটি দল। অভিযোগ তারা সকলেই বজরঙ্গ দলের কর্মী। ঘটনাটি ১৭ জুলাই ঘটলেও জানা গিয়েছে সম্প্রতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৬ ০৩:২৫
Share:

দাদরির ছায়া এ বার কর্নাটকে। গুজরাতের উনায় দলিত নিগ্রহ নিয়ে বিতর্ক চলছেই। তার মধ্যেই গোমাংস খাওয়ার অভিযোগে কর্নাটকের চিকমাগালুরে দলিত একটি পরিবারের উপর হামলা চালালো ৪০-৫০ জনের একটি দল। অভিযোগ তারা সকলেই বজরঙ্গ দলের কর্মী। ঘটনাটি ১৭ জুলাই ঘটলেও জানা গিয়েছে সম্প্রতি। এই হামলায় ওই পরিবারের তিন জন গুরুতর জখম হন। ৭ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস ফের বিজেপিকে আক্রমণের সুযোগ পেয়ে গেল।

Advertisement

একের পর এক দলিত নির্যাতনের ঘটনায় ঘরে-বাইরে সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক দিকে মায়াবতী আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। তেমনই দলের অসন্তুষ্ট নেতা যশবন্ত সিন্হাও দাবি তুললেন, প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল সংসদে এই নিয়ে মুখ খোলা।

মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাতে দলিত নিগ্রহ, উত্তরপ্রদেশে দলিত নেত্রীকে বিজেপির নেতার কুকথার পর দেশজুড়ে বিতর্কে মলম লাগাতে প্রধানমন্ত্রী উত্তরপ্রদেশের জনসভায় গিয়ে উন্নয়নের প্রলেপ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, জাত-পাতের বিষ ঘেঁটে কারও কোনও ভাল হয়নি। কিন্তু সরাসরি দলিত বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি। এর আগে হায়দরাবাদের ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার পর উত্তরপ্রদেশে গিয়েই প্রধানমন্ত্রী এই নিয়ে সমবেদনা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক বিতর্কে এ বারে আরও চাপ বাড়ছে তাঁর উপর। বিশেষ করে সংসদের অধিবেশন এখন চলছে। তার আগে কর্নাটকের খবর সামনে এসে পড়ায় বিরোধীরা হাতে নতুন অস্ত্র এল।

Advertisement

দলিত-বিতর্ক নিয়ে বিজেপির কাছে এই মুহূর্তে সবথেকে বড় আশঙ্কার বিষয় উত্তরপ্রদেশের ভোট। মোদীর সেনাপতি অমিত শাহ সেখানে অনেক দিন ধরেই মায়াবতীর ভিত নাড়িয়ে দলিত ভোটকে কাছে টানার চেষ্টা করছেন। তাতে জল ঢেলে দিয়েছে দলের নেতা দয়াশঙ্কর সিংহের কুকথা। তাঁকে দল থেকে বার করে দিয়েও নিষ্কৃতি হয়নি। এখন অবশ্য পরিস্থিতির মোড় ঘোরাতে মায়াবতীর দলের নেতাদের মুখ থেকে দয়াশঙ্করের স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে করা মন্তব্যকে বিজেপি পাল্টা হাতিয়ার করতে চাইছে। রাজ্যপাল রাম নাইকের কাছে গিয়ে বিজেপি নালিশ জানিয়েছে। দয়াশঙ্করের স্ত্রীও মায়াবতী ও তাঁর দলের নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন।

রাজ্যপাল আগমিকাল দয়াশঙ্করের মেয়ের সঙ্গেও দেখা করবেন। পাশাপাশি মায়াবতীর দলের প্রতিবাদ সভার ভিডিও ফুটেজও চেয়ে পাঠিয়েছেন। বসপা নেতারা মনে করছেন, বিজেপির ইশারাতেই এখন কাজ করছেন রাজ্যপাল। দয়াশঙ্করের মন্তব্যে ঘুরে দাঁড়ানোর যে সুযোগ মায়াবতী পেয়েছেন, সেটি তিনি হাতছাড়া করতে চাইছেন না। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন— মোদীর রাজ্য গুজরাতের উনায় দলিত নিগ্রহের পিছনে রয়েছে বিজেপি-আরএসএস।

এর মধ্যেই আসরে নেমে আজ বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। তিনি বলেন, দয়াশঙ্করের মন্তব্য ঠিক নয়।
কিন্তু মায়াবতীর দলের টিকিট বিতরণ নিয়ে তিনি যে কথা বলেছেন, তা সর্বৈব সত্য। এর পরে মায়াবতীর মন্তব্য— অখিলেশ তাঁকে পিসি বলে ডাকেন, কিন্তু পিসির বিরুদ্ধে মন্তব্য নিয়ে তাঁর কোনও গা নেই। দয়াশঙ্করকে গ্রেফতারও করবে না অখিলেশ সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement