ছবি পিটিআই।
অনুষ্ঠানের আয়োজক সিবিআই। সেই মঞ্চেই ভিডিয়ো-বক্তৃতায় দুর্নীতির ‘পারিবারিক পরম্পরা’ বন্ধের ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যদিও দুর্নীতি দমনে তাঁর জমানার বিভিন্ন উদ্যোগের লম্বা তালিকা তুলে ধরলেও, সেখানে নোটবন্দির কথা এক বারও বললেন না তিনি!
আজ নজরদারি এবং দুর্নীতি দমন সংক্রান্ত ওই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী গোয়েন্দা কর্তা-সহ উপস্থিত সকলকে বলেন, এক-এক পরিবারে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে দুর্নীতি করে চলার যে প্রবণতা, তা বন্ধ হওয়া জরুরি। তার জন্য দরকার কঠোর মনোভাব এবং কোনও তদন্তে ঢিলে না-দেওয়া। তাঁর যুক্তি, “যদি বাড়িতেই কেউ দেখেন যে, আগের প্রজন্ম দুর্নীতির পথে হেঁটে কোটি-কোটি টাকা করেও দিব্যি পার পেয়ে গিয়েছেন কিংবা শাস্তি হয়েছে নামমাত্র, তা হলে তো আরও বেশি করে সেই কাজ করবেন তিনি।…কিছু রাজ্যকে এই প্রবণতা উইপোকার মতো কুরে খেয়েছে।”
মোদীর বক্তব্য, এই প্রবণতা রুখতে দ্রুত তদন্ত এবং তাতে দোষী প্রমাণিত হলে, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া জরুরি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে বরাবরই বিজেপির নিশানায় গাঁধী পরিবার। সেই সঙ্গে, এই দুর্নীতির কথা বলতে গিয়ে প্রায়ই বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদের পরিবারের কথা তোলেন মোদী-অমিত শাহরা। বর্তমানে বিহার ভোটের প্রেক্ষিতে এই মন্তব্য তাই রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। তা ছাড়া, এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতাদের মুখে শোনা যায় ‘ভতিজা’র উল্লেখ। আসে উত্তরপ্রদেশের মুলায়ম সিংহ যাদব-অখিলেশ যাদব-মায়াবতীদের কথাও।
অনেকেরই প্রশ্ন, সিবিআইয়ের মঞ্চে এ কথা তোলা কি কোনও সলতে পাকানোর ইঙ্গিত? তেমনই আবার লালুপুত্র তেজস্বী যাদবের মতো অনেকের কটাক্ষ, “বিজেপি অনেকটা গঙ্গার মতো। হাজার দুর্নীতি করে সেখানে গিয়ে ভিড়লেই অভিযোগ উধাও।” পশ্চিমবঙ্গেও এই অভিযোগ একাধিক বার উঠেছে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া মুকুল রায়ের ক্ষেত্রে। এ দিন মোদীর দাবি, আগের জমানায় ভূরি ভূরি দুর্নীতির পরে ক্ষমতায় এসে তা দূর করতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে সরকার।
কালো টাকা রুখতে কমিটি তৈরি থেকে শুরু করে বেনামি সম্পত্তি আটকানোর আইন তৈরি তার প্রমাণ। কিন্তু এক বারও উল্লেখ করেননি নোটবন্দির কথা! বিরোধীদের কটাক্ষ, “প্রধানমন্ত্রীর দাবি ছিল, ওই এক ওষুধেই সমস্ত কালো টাকা জমা পড়বে ব্যাঙ্কে। আর এখন তা উল্লেখ করতেও তিনি লজ্জা পাচ্ছেন।”