উপচার্য নিয়োগের ক্ষমতা কেড়ে নিতে বিল পেশ হল তামিলনাড়ু বিধানসভায়। ফাইল চিত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে রাজ্যপালের উপচার্য নিয়োগের ক্ষমতা কেড়ে নিতে বিল পেশ হল তামিলনাড়ু বিধানসভায়। এর ফলে রাজ্যে এম কে স্ট্যালিনের নেতৃত্বাধীন ডিএমকে সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সঙ্ঘাতের ক্ষেত্র আরও প্রশস্ত হল।
রাজ্যপাল আর এন রবি আজই উটিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে দু’দিনের সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। এই সময়েই বিধানসভায় নিয়ে আসা হয়েছে তামিলনাড়ু বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনী বিলটি। মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিনের যুক্তি, উপাচার্য নিয়োগে রাজ্য সরকারের ক্ষমতা কম থাকলে উচ্চশিক্ষায় তার প্রভাব পড়বে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাতের উদাহরণ টেনে নিয়ে এসেছেন তিনি। বিরোধী এডিএমকে এবং বিজেপি এই বিলের বিরোধিতা করেছে।
বিলটির পক্ষে স্ট্যালিন বলেন, ‘‘প্রথা মতো রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে উপাচার্যদের নিয়োগ করেন। কিন্তু গত চার বছরে একটা নতুন ধারার জন্ম হয়েছে— যেখানে রাজ্যপাল মনে করেছেন, উপাচার্য নিয়োগ করাটা তাঁর নিজের অধিকার।’’ মুখ্যমন্ত্রীর মতে, এর ফলে ‘নির্বাচিত রাজ্য সরকার’ এবং ‘মানুষের শাসনকে’ অবহেলা করা হয়েছে। উপাচার্য নিয়োগের বর্তমান পদ্ধতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের বিষয়ে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মদনমোহন পুনছির নেতৃ্ত্বাধীন কমিশনের রিপোর্টের কথা টেনে আনেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০১০ সালের সেই রিপোর্টে রাজ্যপালকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল। স্ট্যালিন বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাতে সার্চ কমিটির পেশ করা তিনটি নামের মধ্যে একজনকে উপাচার্য হিসেবে বেছে নেয় রাজ্য সরকার।’’ সার্চ রাজ্য সরকারই গঠন করে। ফলে উপাচার্য নিয়োগে গুজরাত সরকারের অধিকারের কথা বোঝাতে চান তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর যুক্তি, তেলঙ্গানা, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশে এই পদ্ধতিই মেনে চলা হয়। মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরের সরকারও গত বছরের ডিসেম্বরে উপাচার্য নিয়োগে একই রকমের প্রক্রিয়া চালু করেছে।
ঘটনা হল, গত কয়েক বছরে তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল বিভিন্ন সময়ে উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটির সুপারিশকে খারিজ করে দিয়েছেন। তবে রাজভবনকে পাশ কাটিয়ে উপাচার্য নিয়োগের এই বিল পাশ হলেও তাকে আইনে পরিণত করতে গেলে রাষ্ট্রপতির সম্মতি পেতে হবে। আর সেই সুপারিশ পাঠাতে হবে রাজ্যপালেরই মাধ্যমেই। তামিলনাড়ু বিধানসভায় পাশ হওয়া অন্তত দশটি বিল এখনও রাজভবনে পড়ে রয়েছে। রাজ্যপাল ওই বিলগুলি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে দেরি করছেন বলে অভিযোগ এনেছে শাসক দল ডিএমকে। প্রতিবাদে সম্প্রতি রাজভবনে চা-চক্রের অনুষ্ঠান এড়িয়ে গিয়েছেন স্ট্যালিন।