বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ছে পুলিশ। শনিবার শ্রীনগরে। ছবি: পিটিআই।
পর্যটনের ভরা মরসুমে পর পর জঙ্গি হামলায় ফের উত্তপ্ত কাশ্মীর!
অনন্তনাগের বিজবেহেরায় জঙ্গি হামলার চব্বিশ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই আজ দুপুরে ফের জঙ্গি হানা দেখল কাশ্মীর উপত্যকা। শনিবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ অনন্তনাগের বাসস্ট্যান্ডে পুলিশের একটি দলকে লক্ষ করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় জঙ্গিরা। গুরুতর জখম দুই পুলিশকর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তাঁরা মারা যান। আগামী ২২ জুন অনন্তনাগের উপনির্বাচন ঘিরে কয়েক দিন ধরেই উত্তেজনার পারদ চড়েছে শ্রীনগরে। তার মধ্যে পর পর জঙ্গি হানায় স্বাভাবিক ভাবেই বিপর্যস্ত জনজীবন। কাশ্মীরে সবে শুরু হয়েছে পর্যটনের মরসুম। পর্যটক এবং কিছু শ্যুটিংয়ের দল ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে সেখানে। তার মধ্যে এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের। পুলিশ জানিয়েছে আজকের হামলায় নিহতদের এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর বসির আহমেদ, অন্য জন কনস্টেবল রিয়াজ আহমেদ। অনন্তনাগের পুলিশ সুপার আব্দুল জব্বরের কথায়, ‘‘চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই ওই দুই পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।’’ পুলিশ জানায়, দুপুরের ওই হামলার পর অনলাইনে ছড়িয়েছে কয়েকটি বিতর্কিত ছবি। সেখানে এক জঙ্গিকে দেখা গিয়েছে, গুলি চালানোর পর বাসস্ট্যান্ড থেকে বন্দুক হাতে পালিয়ে যেতে। তবে এই ছবি আদৌ আসল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত ৭ জানুয়ারি অনন্তনাগের বিধায়ক তথা কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মহম্মদ সইদের মৃত্যুতে ওই আসনে নির্বাচন অনিবার্য হয়ে পড়ে। ওই কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন খোদ মেহবুবা মুফতি। নির্বাচনকে নজরে রেখে ইতিমধ্যেই কাশ্মীর জুড়ে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। তবুও গত কাল অনন্তনাগের বিজবেহেরায় জঙ্গিদের গুলিতে তিন বিএসএফ জওয়ানের মৃত্যু হয়। নিহত দুই জওয়ানকে আজ অনন্তনাগ জেলা পুলিশ লাইনে শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। এরই মধ্যে ভারত-পাক সীমান্ত দিয়ে জঙ্গি অনুপ্রবেশের আগাম সতর্কতা দিয়েছেন গোয়েন্দারা।
জঙ্গি হানা, অনুপ্রবেশ সতর্কতার পাশাপাশি, কালও সেনা ও পণ্ডিত কলোনি তৈরির প্রস্তাবের বিরোধিতা করে খাস শ্রীনগরেই পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে জড়ায় কিছু যুবক। এ দিনও শ্রীনগরে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংর্ঘষ বাধে। আর এ সবের প্রভাবে পর্যটনের মরসুমে ধাক্কা খাচ্ছে ব্যবসা। কাশ্মীরকে ছন্দে ফেরাতে পর্যটক ও শ্যুটিংয়ের দলকে সেখানে নিয়ে আসার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু বিক্ষোভ আর জঙ্গি হানার ভয়ে ধাক্কা খাচ্ছে সেই উদ্যোগ।