ললিপপ ছেড়ে হাতে বন্দুক! নিহত কিশোর

এর মধ্যেই জাহিদের দু’টি ছবি ভাইরাল হয়েছে। একটিতে দেখা যাচ্ছে, ললিপপ হাতে দাঁড়িয়ে সে। অন্যটি তার মৃতদেহের ছবি। দু’টি ছবিতে একটাই সাদৃশ্য। জাহিদের মুখের ডান দিকের একটা দাগ!

Advertisement

সাবির ইবন ইউসুফ

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৮ ০৩:৪৮
Share:

ললিপপ হাতে জাহিদ।

ললিপপ খেতে বড্ড ভালবাসত ছেলেটা। সেই ছেলেটারই আবার জঙ্গি হওয়ার বড় সাধ!

Advertisement

চোখের সামনে শিশু থেকে কিশোর হয়ে ওঠা ছেলেটির এমন কাজ তাই মানতে পারছেন না দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগাম জেলার ব্রেহারাদা ইয়ারিপোরা গ্রামের অনেকে। গত ৬ জুন কাশ্মীরের মছিল সেক্টর দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় যে তিন জঙ্গি সেনার হাতে নিহত হয়েছে, তাদের মধ্যেই রয়েছে সেই কিশোর, জাহিদ রশিদ বাট। সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া গ্রামের চেনা ছেলেটি কী ভাবে এত কম বয়সে জঙ্গি দলে নাম লেখাল, সেটাই ভাবাচ্ছে পড়শিদের। সকলের মনে এখন একটাই প্রশ্ন, ললিপপের জায়গায় কী ভাবে বন্দুক উঠে এল ওই কিশোরের হাতে?

জাহিদের এক দিদি জানিয়েছেন, খুব অল্প বয়স থেকেই জঙ্গি হতে চাইত জাহিদ। তার জন্য সে যোগাযোগও করেছিল স্থানীয় জঙ্গিদের সঙ্গে। কিন্তু এত ছোট ছেলেকে দলেই নিতে চায়নি তারা। এমনকি, জাহিদকে ভাল করে পড়াশোনা করার পরামর্শও দেয় তারা। বাড়িতেও নানা ভাবে জাহিদকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতেও যে লাভ হয়নি, তার প্রমাণ গত বছর একটি ভিসা জোগাড় করে কোনও ভাবে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে পৌঁছে জঙ্গিদলে তার নাম লেখানোয়। এতেই স্পষ্ট, জঙ্গি হওয়ার জন্য সে কতটা মরিয়া হয়ে উঠেছিল।

Advertisement

ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়, গত ৬ জুন মছিল সেক্টরে নিহত জঙ্গিদের মধ্যে ছিল জাহিদ। পরে তাংধর এলাকায় তার শেষকৃত্য হয়। ও দিকে, জাহিদের দেহ হাতে পাওয়ার জন্য গত ১৫ দিন ধরে দাবি জানাচ্ছে তার পরিবার। ওই কিশোরের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হোক— এই দাবিতে আজ বিক্ষোভ দেখাতে পথে নামেন গ্রামবাসীরাও। এখানেই শেষ নয়, পুলিশ ও প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে কুপওয়ারায় রীতিমতো ধর্নায় বসে পড়েছে জাহিদের পরিবার। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।

এর মধ্যেই জাহিদের দু’টি ছবি ভাইরাল হয়েছে। একটিতে দেখা যাচ্ছে, ললিপপ হাতে দাঁড়িয়ে সে। অন্যটি তার মৃতদেহের ছবি। দু’টি ছবিতে একটাই সাদৃশ্য। জাহিদের মুখের ডান দিকের একটা দাগ!

মাত্র ১৪ বছর বয়সেই জাহিদের মাথায় কী ভাবে জঙ্গি হওয়ার ভূত চাপল, তা এখনও স্পষ্ট নয় কারও কাছেই। পরিবার জানিয়েছে, কী ভাবে জাহিদ ভিসা জোগাড় করল আর কী ভাবেই বা পাক অধিকৃত কাশ্মীরে গেল, তা বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা। এ ভাবে জঙ্গি দলে নাম লিখিয়ে সেনার হাতে বাড়ির ছেলের মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না পরিবার বা পড়শিরা। তাদের মুখে একটাই কথা, এটা শুধুই মোহ। আর কিচ্ছু নয়!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement