—প্রতীকী ছবি
কোথাও ধারের টাকা শোধ করতে না পেরে সন্তান-সহ পালিয়ে গিয়েছেন মহিলা, কোথাও টাকা মেটাতে না পেরে জেলাশাসকের দফতরের সামনে আত্মহত্যার অনুমতি ভিক্ষা করছেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত গায়ক, কোথাও আবার ঋণ শোধ করতে না পেরে দেড় বছরের ছেলেকে বুকে বেঁধে দিহিং নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন মা।
উজানি অসম জুড়ে শোনা যায় ঋণের ফাঁদে পড়ে বাড়ি থেকে পালানো, আত্মঘাতী হওয়া, হেনস্থার কাহিনী। ক্ষুদ্র ঋণের ক্ষেত্রে কৃষি অর্থনীতির রাজ্য অসম বরাবর এগিয়ে। চা বাগানগুলিতেও ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থাগুলি জনপ্রিয়। মাইক্রোফিনান্স ইনস্টিটিউশন নেটওয়ার্কের তরফে জানানো হয়, অসমে প্রায় ২০টি সংস্থা কাজ করছে। মোট গ্রাহক প্রায় ২৮ লক্ষ। কিন্তু বেশ কিছু অনিয়ন্ত্রিত সংগঠন মোটা সুদের লোভ দেখিয়ে সঞ্চয় প্রকল্প চালাচ্ছে। সেগুলি অবৈধ। রাজ্য সরকারের হিসেবে অন্তত ১২০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে এই সংস্থাগুলি। তার অধিকাংশই বেআইনি ও নিয়ম বহির্ভুত ঋণ।
রাজ্যে লগ্নি সংস্থাগুলির কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করতেই বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে সর্বসম্মতভাবে পাশ হল মাইক্রো ফিনান্স ইনস্টিটিউশনস (রেগুলেশন অফ মানি লেন্ডিং) বিল ২০২০। অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, বিশেষ ভাবে রাজ্যের দরিদ্র মহিলাদের বাঁচাতেই এই বিল আনা হয়েছে। বেআইনি ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থা ও টাকা ধার দেওয়া কোম্পানিগুলিকে কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করবে রাজ্য। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া নিয়মের আওতায় সকলকে কাজ করতে হবে। এখন থেকে বৈধ নথিভুক্তিকরণ ছাড়া কোনও সংস্থা টাকা ধার দিতে পারবে না। ধারের পরিমাণ কোনওভাবেই এক লক্ষ ২৫ হাজারের বেশি হতে পারবে না। এক জন দু’বারের বেশি ঋণ পাবেন না।
অসমে ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে হেনস্থার অভিযোগ এতই উঠছে যে বিভিন্ন নির্বাচনী সভা, জনসভায় শাসক ও বিরোধী-দুই পক্ষেরই হাতিয়ার হয়ে উঠেছে মাইক্রোফিনান্স। জনসভায় ঋণ মকুব করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে প্রদেশ কংগ্রেস। বিজেপিও ঋণ নেওয়া মহিলাদের সুদ মাফ করার টোপ দিচ্ছে।