NAtional News

শিক্ষিকার মুণ্ডু কেটে নিয়ে দু’ঘণ্টা দৌড়, ধরতে হিমশিম পুলিশ

স্কুলের পাশে একাই থাকেন মানসিক ভারসাম্যহীন হরি হেমব্রম। আচমকাই তিনি স্কুলে ঢুকে সটান চলে যান মিড ডে মিলের ওই জায়গায়। সেখান থেকে টানতে টানতে সুক্রা হেসাকে নিজের বাড়ির কাছে নিয়ে আসেন। সেখানেই শিক্ষিকার গলা কেটে শরীর থেকে মুণ্ডু আলাদা করে ফেলেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

রাঁচি শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৮ ১৭:৩৮
Share:

গ্রাফিক শৌভিক দেবনাখ।

এক হাতে উন্মুক্ত তলোয়ার। অন্য হাতে মহিলার কাটা মুণ্ডু। জঙ্গলের রাস্তায় ছুটে চলেছেন এক ব্যক্তি। পিছনে তাড়া করছে পুলিশ-গ্রামবাসী।

Advertisement

রোমহর্ষক নাটকীয় এই ঘটনার সাক্ষী থাকল ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা-খারসোয়ান জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম। মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ব্যক্তিকে ধরতে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এভাবে ছুটতে হল পুলিশ ও গ্রামবাসীদের। কয়েক ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস এই নাটকে অবশেষে যবনিকা পড়ল যখন জঙ্গলের একটি ঝোপের মধ্যে থেকে ওই ব্যক্তিকে টেনে বের করে আনলেন গ্রামবাসীরা। ধরে উত্তম-মধ্যম দিলেন। যা ঠেকাতে হিমশিম খেতে হল পুলিশকেও। স্কুল শিক্ষিকাকে গলা কেটে খুনের অভিযোগে ধৃত শ্রীঘরে হরি হেমব্রম (২৬) নামে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন।

বুধবার দুপুরে ঘটনার সূত্রপাতও নাটকীয় ভাবে। সরাইকেলার হেসেল গ্রামের খাপড়াসাই স্কুলে দুপুরে মিড ডে মিল খাচ্ছিল পড়ুয়ারা। তদারকি করছিলেন বছর তিরিশের স্কুলশিক্ষিকা সুক্রা হেসা। স্কুলের পাশে একাই থাকেন মানসিক ভারসাম্যহীন হরি হেমব্রম। আচমকাই তিনি স্কুলে ঢুকে সটান চলে যান মিড ডে মিলের ওই জায়গায়। সেখান থেকে টানতে টানতে সুক্রা হেসাকে নিজের বাড়ির কাছে নিয়ে আসেন। সেখানেই শিক্ষিকার গলা কেটে শরীর থেকে মুণ্ডু আলাদা করে ফেলেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: যৌন মিলনের সময় শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু, খুনের মামলা দায়ের মুম্বই পুলিশের

খবর রটে যায় গ্রামে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এলাকায় প্রচুর মানুষের ভিড় জমে যায়। কিন্তু কেউ হরি হেমব্রমের কাছে ঘেঁষতে সাহস পাননি। কারণ তখনও হাতে তলোয়ার উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন হরি। খবর যায় পুলিশে। পুলিশও তড়িঘড়ি গ্রামে পৌঁছয়।

কিন্তু পুলিশ দেখেই এক হাতে ওই শিক্ষিকার কাটা মুণ্ডু তুলে নেন হরি। অন্য হাতে খোলা তলোয়ার ছিলই। ওই অবস্থাতেই মুণ্ডু ও তলোয়ার হাতে নিয়ে গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলের মধ্যে ছুটতে শুরু করেন হরি। পিছু ধাওয়া করে পুলিশও। তার পিছনে ছুটতে শুরু করেন গ্রামবাসীরাও। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা এভাবে চলার পর একটি জায়গায় গিয়ে ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে পড়েন হরি। ওই অবস্থায় তাঁর কাছে যাওয়ার সাহস পাচ্ছিলেন না পুলিশকর্মীরাও।

অবশেষে কোনওক্রমে ধীরে ধীরে তাঁর কাছে গিয়ে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় মারধর। জনরোষের কাছে পুলিশকর্মীরাও কার্যত অসহায় হয়ে পড়েন। হরিকে উদ্ধার করতে গিয়ে আহত হন চার পুলিশকর্মীও। তবে শেষমেষ তাঁকে উদ্ধার প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে জামসেদপুরের এমজিএম হাসপাতালে নিয়ে যান পুলিশকর্মীরা।

আরও পড়ুন: এঁরাও শিকার হয়েছিলেন শেয়ারড সাইকোটিক ডিসঅর্ডারের!

সরাইকেলার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অবিনাশ কুমার জানিয়েছেন, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সরাইকেলা থানার ওসি রণবিজয় সিংহ-সহ চার পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। রণবিজয় জানিয়েছেন, এক সময় ওই ব্যক্তিকে গুলি করে কাবু করার চিন্তাভাবনাও করা হচ্ছিল। কিন্তু যে সংখ্যায় গ্রামবাসীরা জড়ো হয়েছিলেন, তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে, এই আশঙ্কায় সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement