Karnataka Assembly Election 2023

‘দখিন হাওয়া’র জয়গান নেটরাজ্যে

অতীতে বিহারের ভোটফল নিয়েও রবীন্দ্রপ্রেমী বাঙালি শব্দের খেলায় মেতেছিল— ‘বিশ্ব সাথে যোগে যেথায় বিহারও’! পশ্চিমবঙ্গের অনেক বাঙালির দ্বিতীয় বাড়ি বেঙ্গালুরুর ভোট-কাণ্ডের ছায়াতেও সেই তিনিই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৩ ০৮:০৭
Share:

কর্নাটকের ভোটফলের কংগ্রেস সমর্থকদের উচ্ছ্বাস। ছবি: পিটিআই।

কেউ বলছেন, ‘আজি দখিন দুয়ার খোলা’! কেউ বা ‘দখিন হাওয়া জাগো জাগো, জাগাও জাগাও’! কর্নাটকের ভোটফলের আমেজে বাঙালির দিনভর নেট-আড্ডার মাঠেও পুরোভাগে সেই রবীন্দ্রনাথ। মোকার পরোক্ষ প্রভাবে রাজ্যে তাপপ্রবাহ খানিক টাল খেয়েছিল বটে শনিবার! কিন্তু তা বলে দখিন হাওয়ার স্পর্শে এমন অকালবসন্তের আমেজ নেমে আসবে তা-ই বা কে ভেবেছিল!

Advertisement

অতীতে বিহারের ভোটফল নিয়েও রবীন্দ্রপ্রেমী বাঙালি শব্দের খেলায় মেতেছিল— ‘বিশ্ব সাথে যোগে যেথায় বিহারও’! পশ্চিমবঙ্গের অনেক বাঙালির দ্বিতীয় বাড়ি বেঙ্গালুরুর ভোট-কাণ্ডের ছায়াতেও সেই তিনিই। তবে দক্ষিণ ভারত থেকে বিজেপির কার্যত মুছে যাওয়া উপলক্ষে ঠেস দিতে রবীন্দ্রগানের দখিন হাওয়ার প্রেরণা ছাড়াও, দেশের নানা সাম্প্রতিক ঘটনারও আঁচ এসে পড়েছে। রসিকতার সুরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ ভারতকে গুরুত্ব দিতে ইতিহাস বই থেকে বিজেপি মোগলদের ছেঁটে ফেলল অথচ দক্ষিণ ভারত কি না তাদের পুরোপুরি উৎখাত করে ছাড়ছে। শ্লেষাত্মক ভঙ্গিতে টিভি-র খবরের আদলে একটি ভিডিয়ো, কেরালার বদলে কর্নাটক স্টোরিই অভাবনীয় আলোড়ন ফেলল বলে আক্ষেপ করেছে। আবহাওয়ার খবর দেওয়ার ভঙ্গিতে তাতে দক্ষিণ ভারতের আকাশে দুর্যোগের ফলে দিল্লির শাসক-শিবিরে ধাক্কার ফিরিস্তি। 'গোদি মিডিয়া' তকমাধারী কয়েকটি চ্যানেল লোকসভা ভোটের আগে দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের ভোটের বদলে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির পুরভোট নিয়ে মেতে আছে বলেও সমাজমাধ্যম এ দিন বিদ্রুপে মুখর। কারও টিপ্পনী, তেজস্বী সূর্যের বাল্ব কেটে গেল! কেউ জেডিএস-এর সুযোগসন্ধানী নেতা কুমারস্বামীর এ বার বিধি বাম বলে রসিকতায় মেতেছেন।

দিনের শুরুতে অবশ্য কেউই কী হবে বলতে পারছিল। কংগ্রেস সকাল থেকেই অনেকটা এগিয়ে! তবু প্রধানমন্ত্রীর ভোট-প্রচারের বুলি আউড়ে ‘বজরঙ্গবলি রক্ষা করবেন’ বলে বুক বেঁধেছেন বিজেপি সমর্থকেরা। সোজা আঙুলে ঘি ওঠা নিয়ে সবার মনেই সংশয়! তখন হাতে হাতে ঘুরছে, ঢাউস টাকার সুটকেস পিঠে মোটরবাইকে সওয়ার জনৈক মধ্যবয়সির ছবি। পিছন থেকে যাঁকে স্পষ্ট অমিত শাহ বলে চেনা যাচ্ছে। ছবির গায়ে লেখা, গন্তব্য বেঙ্গালুরু। শেষমেশ অবশ্য এ যাত্রা, ঘোড়া কেনাবেচাতেও বিজেপি কূল পাবে না প্রত্যয়ই গাঢ় হয়েছে। বিজেপি এবং জেডিএস দলের মোট আসনের থেকেও ঢের এগিয়ে কংগ্রেসের আসনসংখ্যা! এই হিসেব স্পষ্ট হতেই রিসর্ট মালিকদের সর্বনাশে কপট হা-হুতাশের সুর প্রকট হয়েছে। দক্ষিণ ভারত আজ যা ভাবে… বলে ২০২৪য়ে বিজেপির জন্য হুঁশিয়ারির সুরই ক্রমশ সমাজমাধ্যমের মেজাজটা বেঁধে দিয়েছে। তবে এত হাসিঠাট্টায় কারও কারও অবশ্যই মুখ গম্ভীর হয়েছে। নেট-রসিকেরা তাই রবীন্দ্রনাথের লিপিকা-র পংক্তিরও শরণ নিয়েছেন। ‘ছেলেরা বুক ফুলিয়ে বললে কর্নাটের জিৎ! মন্ত্রীর মুখ গম্ভীর হল, রাজার চক্ষু রক্তবর্ণ, বিদূষক হা হা করে হেসে উঠল।’ এমন দিনে এমন উদ্ধৃতি বিশেষ অর্থবহ হয়ে উঠেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement