রামনবমী পড়েছে রবিবার। তবু ছুটির ফাঁদে সংসদ!
এমনিতেই কাজ হচ্ছে না সংসদে। নষ্ট হয়েছে ১৫ দিনের অধিবেশন। তা সত্ত্বেও রামনবমীতে বাড়তি ছুটি আদায় করে নিলেন সাংসদেরা। রবিবার নিজের নিজের সংসদীয় এলাকায় রামনবমী পালন করে সোমবার সক্কাল-সক্কাল সংসদে ফিরে আসা নাকি বেজায় ঝামেলার। কষ্টসাধ্য! আজ তাই সকাল থেকেই লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের কাছে দলমত নির্বিশেষে অনুরোধ জমা পড়তে থাকে, সোমবার ছুটি চাই। সব দলের এক রা দেখে লোকসভা সোমবার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন।
লোকসভা ছুটি পেলে, রাজ্যসভা পিছিয়ে থাকে কেন! শুরু হয় গুজগুজ ফুসফুস। এর পরে সমস্বরে দাবি ওঠে, সোমবার ছুটি চাই রাজ্যসভা সাংসদদেরও। খবর পৌঁছয় রাজ্যভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুর কাছে। রামনবমীর জন্য বাড়তি এক দিন ছুটি দেওয়া নিয়ে কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ কিংবা তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েনের মতো নেতারা কী ভাবছেন, তা জেনে নেন বেঙ্কাইয়া। ছুটির প্রশ্নে সবুজ সঙ্কেত দেয় সব শিবিরই। এর পরে লোকসভার পথেই ছুটির ঘোষণা হয় রাজ্যসভাতেও।
কংগ্রেসের এক সাংসদের আবার সহাস্য কটাক্ষ, ‘‘শুনলাম সোমবার ছুটি চেয়ে সবচেয়ে বেশি তদ্বির এসেছে দক্ষিণের দুই দলের কাছ থেকে। চলতি সপ্তাহের গোটা অধিবেশনটাই লোকসভার কক্ষে নেমে হইচই করে ভেস্তে দেওয়াটা দুই দলের সাংসদদের কাছে কম পরিশ্রমের নাকি!’’ ওই সাংসদের মতে, ‘‘আবার তো মঙ্গলবার থেকেই ওই একই ভূমিকায় নামতে হবে ওই সাংসদদের। তাই হয়তো বিশ্রাম নিয়ে একটু তাজা হয়ে আসতে চাইছেন।’’
বিরোধী শিবিরের কংগ্রেস ও তৃণমূল উভয়েরই অভিযোগ, গত এক সপ্তাহ ধরে বিজেপির উস্কানিতেই হইচই করে অধিবেশন ভেস্তে দিয়েছেন এডিএমকে এবং কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের টিআরএস সাংসদেরা। যাতে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব তোলাই না যায়।
তৃণমূল নেতা ডেরেকের বক্তব্য, মঙ্গলবার লোকসভায় কী হবে বলা যাচ্ছে না। তবে রাজ্যসভায় সে দিন স্বাভাবিক কাজ হবে। কারণ, ৫৮ জন রাজ্যসভা সাংসদের সেটাই শেষ দিন। তাঁরা বিদায়ী বক্তব্য রাখবেন, দলনেতারাও তাঁদের সম্পর্কে বলবেন। সুতরাং মঙ্গলবার কাজে ফাঁকি দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।
সংসদ শেষে বিদায়ী সাংসদদের সম্মানে নৈশভোজ দেবেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া।