—প্রতীকী ছবি।
মণিপুরে এত দিন মেইতেই ও কুকিদের সংঘর্ষ চলছিল। কিন্তু রবিবার ইম্ফলে পুলিশের চোখের সামনে মেইতেই সংগঠন মেইতেই লিপুনের প্রধান প্রমোদ সিংহের গুলিচালনার অভিযোগের ফলে নতুন ভাবে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
সমাজমাধ্যমে প্রকাশিত সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, প্রথমে প্রমোদের বাহিনীর সদস্যেরা রাস্তার পাশে পড়ে থাকা কাউকে লাথি মারছে। পরে প্রমোদকে পিস্তল থেকে সে দিকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। তবে কাকে লক্ষ্য করে প্রমোদ গুলি ছুড়েছেন তা স্পষ্ট নয়। অন্য একটি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, প্রমোদ ও তাঁর রাইফেলধারী সঙ্গীরা এক হিন্দিভাষীর সঙ্গে তর্কের পরে তাঁকে লাঠি দিয়ে মারধর করতে শুরু করলেন। পরে প্রমোদকে পিস্তল বার করে হুমকি দিতে দেখা গিয়েছে। পুলিশ আজ প্রমোদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজ, সম্পত্তি ধ্বংস, দলবদ্ধ অপরাধ ও অস্ত্র আইনের চারটি ধারায় এফআইআর করেছে।
ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রমোদ আজ সাংবাদিকদের বলেন, “ওখানকার মেইতেই মন্দির ও অন্য একটি সম্প্রদায়ের মন্দিরের মধ্যে আদালত স্পষ্ট এলাকা ভাগ করে দিলেও অন্য সম্প্রদায়ের সদস্যেরা ক্রমেই মেইতেই এলাকা দখল করছিল। স্থানীয় বিধায়ক পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ায় পুলিশও ব্যবস্থা নিচ্ছিল না। তাই আমিই যা করার করেছি।”
এ দিকে মেইতেই-বিরোধী মন্তব্য করায় রাজ্যের প্রাক্তন এএসপি থৌনাওজাম বৃন্দার বাড়িতে আজ আক্রমণ চালানো হয়। বলা হয়েছে, আগামিকাল বেলা ১২টার মধ্যে ক্ষমা না চাইলে তাঁকে ইয়াইসকুলের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে। এর আগেও মেইতেইদের বিরুদ্ধে কথা বলায় বৃন্দার বাড়িতে চড়াও হয়েছিল জনতা। তাঁকে প্রকাশ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হয়েছিল।
মণিপুরে ফের সংঘর্ষ বৃদ্ধি পাওয়ার জেরে কেন্দ্র তড়িঘড়ি সিবিআই অধিকর্তা প্রবীণ সুদকে মণিপুরে পাঠিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বিশেষ বিমানে ইম্ফলে এসেছেন তিনি। প্রবীণ রাজ্যে সংঘর্ষগুলি নিয়ে চলতে থাকা সিবিআই তদন্তের গতিপ্রকৃতি তদারক করবেন। সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্ত দলের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। রাজ্যে সম্প্রতি ১৩ জন মেইতেইয়ের মৃত্যু, বিভিন্ন এলাকায় ফের গুলিচালনা, ড্রোন থেকে বোমা ফেলার ঘটনা ঘটেছে। আবার নাগাদের দুই জঙ্গি সংগঠনের মধ্যেও লড়াইয়ে ৩ জন নিহত হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ বলেন, ‘‘রাজ্যে সব সম্প্রদায়কে মিলেমিশে থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। যে সব ব্যক্তি বা সংগঠন অস্ত্র প্রদর্শন করছে বা সশস্ত্র হয়ে রাস্তায় ঘুরছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ-প্রশাসন বাদে আইন হাতে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। তেমন হলে সরকার নীরব দর্শক হয়ে বসে থাকবে না।’’