গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
হিমালয় ঘেরা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি)-য় ভারত-চিন টানাপড়েনের আঁচ পৌঁছে গেল আমেরিকাতেও! দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে সীমান্ত সমস্যা ঘিরে সংঘাতের সম্ভাবনা দূর করতে বৃহস্পতিবার মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু বিদেশ মন্ত্রক পত্রপাঠ খারিজ করল সেই প্রস্তাব।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। তার পর যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘চিন বিশ্ব রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমি মনে করি চিনের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক হতে চলেছে। কোভিডের আগে পর্যন্ত আমার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট শি-র (জিনপিং) নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।’’ এর পরেই মোদীকে সম্বোধন করে ট্রাম্প বলেন, ‘‘এ বার আমি ভারতের প্রসঙ্গে আসছি। আমি সীমান্তে সংঘর্ষের আবহ দেখতে পাচ্ছি, যা খারাপ বিষয়। যদি সুযোগ থাকে আমি সাহায্য করতে চাই। কারণ, এটি বন্ধ করা উচিত।’’
প্রধানমন্ত্রী মোদী সরাসরি ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কিছু বলেননি। তবে বিদেশ মন্ত্রক শুক্রবার নাম না করে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের প্রস্তাব কার্যত খারিজ করেছে। সমাজমাধ্যমে বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রীর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য— ‘‘যে কোনও প্রতিবেশীর সঙ্গে আমাদের যে সমস্যাই থাকুক না কেন, আমরা সব সময়ই তার সমাধানের জন্য দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পন্থা অনুসরণ করেছি।’’ ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতেই মিস্রীর ওই মন্তব্য বলে মনে করা হচ্ছে।
ভারত এবং চিনের মধ্যে সীমান্তের কিছু এলাকা নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। তবে ১৯৬২-র যুদ্ধ এবং ১৯৬৭-র সীমান্ত সংঘর্ষের পর থেকে এলএসিতে আগ্নেয়াস্ত্রের প্রয়োগ প্রায় হয়নি। ২০১৭ সাল থেকে অবশ্য পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হতে শুরু করে। সে বছর ডোকলামে টানা ৭৩ দিন দু’দেশের বাহিনী পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিল। পরে কূটনৈতিক পথে সমস্যার সমাধান হয়। কিন্তু মাঝেমধ্যেই অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে বা সিকিম এবং লাদাখের নানা অংশে এলএসি লঙ্ঘনের চেষ্টা করে চিন উত্তাপ বাড়িয়েছে বার বার। ২০২০-র জুন মাসে পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে রক্তাক্ত সংঘর্ষের পরেও কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই আবার শান্তি ফিরেছে এলএসিতে। তাই সেই পথই অনুসরণ করতে চায় মোদী সরকার।