মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানে কংগ্রেসকে শেষ পর্যন্ত সমর্থন করেছিলেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। অখিলেশ সিংহ যাদবও সার্বিক বিজেপি-বিরোধিতার প্রশ্নে রাহুল গাঁধীর সঙ্গেই রয়েছেন। কিন্তু রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তীসগঢ়— এই তিন রাজ্যে কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রীর শপথে গরহাজির থাকলেন মায়া-অখিলেশ। পাঠানো হল না তাঁদের কোনও প্রতিনিধিও।
বিষয়টি নিয়ে কিছুটা চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক শিবিরে। উঁকিঝুঁকি মারছে উনিশের ভোটকে সামনে রেখে কিছু সম্ভাবনার কথাও। তবে এই সিদ্ধান্ত যে নেহাতই কৌশলগত, তা ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছেন দু’দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এসপি-র এক শীর্ষ নেতার মতে, ‘‘আমরা উনিশের ভোটের আগে মায়াবতীকে এমন কোনও বার্তা দিতে চাই না, যাতে তাঁর সঙ্গে জোট গড়তে বিন্দুমাত্র বাধা আসে। উত্তরপ্রদেশে বিজেপির মোকাবিলায় দুই প্রধান শক্তি এসপি এবং বিএসপি-র জোট বাঁধাটা অত্যন্ত জরুরি।’’ বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে আগেই কথা বলে রেখেছেন অখিলেশ। মায়াবতীও কংগ্রেসের সঙ্গে বেশি ঘনিষ্ঠতা দেখাতে চাইছেন না। কারণ তাঁর উপরেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার খাঁড়া ঝুলছে। তবে মধ্যপ্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ জানিয়েছেন, মায়া তাঁকে জানিয়েছেন, ইচ্ছা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি। তবে তিনি বলেন, ‘‘অখিলেশ আসবেন বলেছিলেন। কেন আসেননি জানি না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, পারিবারিক কিছু কাজ থাকায় এই দিন তিনি আসতে পারছেন না।’’
শপথ গ্রহণে তৃণমূল পাঠিয়েছে রাজ্যসভার সাংসদ নাদিমুল হককে। সিপিএম ওই অনুষ্ঠানে গরহাজির ছিল। তিন রাজ্য থেকেই সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির জন্য নিমন্ত্রণ এসেছিল। ইয়েচুরি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের জন্যই যে আমরা হাজির থাকতে পারব না, সেটা জানানো হয়েছিল।’’ বাস্তবে রবিবারই কমিটির বৈঠক শেষ হয়ে গিয়েছিল। সূত্রের খবর, তিনটি রাজ্যেই সিপিএম কংগ্রেসকে সমর্থন করেনি। সেই কারণেই শপথ গ্রহণ এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত। তিনটি রাজ্যের সঙ্গে তেলঙ্গানাতেও সিপিএম আলাদা জোট করে লড়েছে। রাজস্থানের কয়েকটি আসনে সিপিএম ভোট কাটায় বিজেপির সুবিধা হয়েছে। তা নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিতর্কও হয়েছে। প্রাথমিক বিশ্লেষণে দলের মত, এর ফলে পার্টি লাইন ভেঙেছে। কারণ পার্টি কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত ছিল, সিপিএম বিজেপিকে হারানোর চেষ্টা করবে। যেখানে সিপিএমের শক্তি নেই, সেখানে বিজেপির বিরুদ্ধে যে সব থেকে শক্তিশালী, তাকে সাহায্য করবে। রাজ্য নেতৃত্বকে লোকসভা ভোটের রণকৌশল ঠিক করার সময় পার্টি লাইন মাথায় রাখার কথা তাই মনে করিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি।